ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যদি ইরান চুক্তি না করে সেক্ষেত্রে তাদের ওপর আরও বড় হামলা হবে। সেই হুমকির পর নজর ছিল রবিবারে হতে চলা পরমাণু বৈঠকের দিকে। প্রশ্ন উঠেছিল ইরান কি অংশ নেবে? জল্পনা সত্যি করে ইরান জানিয়ে দিল এই বৈঠকে তারা থাকবে না।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অবস্থার জন্য ট্রাম্প দায়ী করেছিলেন ইরানকেই। এবার ইরান দায় চাপাল আমেরিকার ওপরে। ট্রাম্প ইজরায়েলি হামলা সম্পরকে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন বলেই ইরানের অভিযোগ। এই আবহে সেই দেশের সঙ্গে পরমাণু বৈঠকে বসার কোন মানেই নেই বলে মনে করছে ইরান ফলে ভেস্তে গেল আমেরিকা ইরানের পরমাণু বৈঠক।
ইরানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, “ আমেরিকার আচরণই এমন যে, আলোচনা অর্থহীন হয়ে পড়েছে, ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন “আপনি একই সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসতে চান, আবার ইজ়রায়েলকে ইরানের ভূখণ্ডে আক্রমণ করার সুযোগ করে দিতে চান। দুটো একসঙ্গে হতে পারে না তাই ইরান এই বৈঠক থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে”। উল্লেখ্য, এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি নতুন করে কার্যকর করা। ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় আমেরিকা। সেই চুক্তি নিয়ে ছিল বৈঠক। কিন্তু ইরান দাবি করেছে, এই বৈঠকের কোনও ভিত্তি নেই। এই মুহূর্তে ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে ইরান। আর কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করলেই ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে। কিন্তু আমেরিকা চায় এখানেই থেমে যাক ইরান। আসলে ইরান পরমাণু শক্তিধর হোক, তা পশ্চিমী বিশ্ব কোনওভাবেই চায় না সেই কারণে ইরানের ওপরে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ক্ষুব্ধ আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালে একটি পরমাণু চুক্তি করে ইরান। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরান নিজেদের পরমাণু প্রকল্প সীমিত করবে। এর বিনিময়ে তেহরানের ওপর থেকে তুলে নেওয়া হবে নিষেধাজ্ঞা। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরই সেই চুক্তি থেকে আমেরিকাকে সরিয়ে নেন ট্রাম্প। গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর তেহরানের সঙ্গে এই সংক্রান্ত চুক্তি নতুন করে করতে আবার তৎপর হয়েছেন তিনি। তবে নয়া চুক্তিতে একাধিক মার্কিন শর্তে আপত্তি জানিয়েছে ইরান। যার জেরেই ক্ষুব্ধ হয় হোয়াইট হাউস। এবার ইরানের এই প্রত্যাখ্যান কিভাবে নেবেন ট্রাম্প সেটাই দেখার।
ইরান ইজরায়েলের এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, ‘এই হামলার কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল ইরানকে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেই ইজরায়েল হামলা চালিয়েছে। এই হামলা ঠেকাতে আলোচনা এবং কূটনীতির মাধ্যমে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা তিনি করেছিলেন। কিন্তু ইরান তাদের অবস্থানে অনড় ছিল। সেই কারণেই তাদের এই পরিণতি’।