লাল সাহেবের মেয়ে মুখরক্ষা নয়, মুখ উজ্জ্বল করল ঘাসফুল শিবিরের। কর্পোরেট দুনিয়া থেকে একেবারে মেঠো পথের রাজনীতিতে কালীগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। ভোট বাক্সে সংখ্যার নিরিখে বাবাকে টেক্কা দিয়েছে মেয়ে। আর ২৬ শের বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার ভোটে দ্বিতীয় হয়েই মুখরক্ষা হল বিজেপির। কংগ্রেস পেল লাস্ট বয়ের তকমা।
বিশ্বজিৎ দেবনাথ, সাংবাদিক, নদিয়া- ২৬ শের বিধানসভা ভোটের আগে কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। ভোট ময়দানে নবীন হলেও মানুষ তাঁকে খালি হাতে ফেরায়নি। প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোটে জয়লাভ করেছেন আলিফা আহমেদ। শুধু জেতা নয় বাবার ভোটে জেতার রেকর্ডকে ভেঙে দিয়ে জয়লাভ করলেন আলিফা। কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ প্রয়াত হওয়ায় এই কেন্দ্রে হয় উপনির্বাচন। কার্যত বিধানসভা ভোটের আগে এই কেন্দ্রে নিজেদের শক্তিপরীক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেস। আর এই শক্তিপরীক্ষার প্রতিযোগিতায় বাজিমাত করে স্বস্তি ঘাসফুল শিবিরে। অন্যদিকে বিজেপি উঠে এল দ্বিতীয় স্থানে।
ভোটে জেতার খবর পেতেই নিজের এক্স হ্যান্ডলে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এলাকার সব ধর্ম, সব বর্ণ, সব জাতি এবং সর্বস্তরের মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আমাদের বিপুলভাবে আশীর্বাদ করেছেন। আমি নতমস্তকে তাঁদের আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই জয়ের প্রধান কারিগর মা-মাটি মানুষ। ৪৯ হাজার ৭৫৫ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। গতবারের থেকে প্রায় ৩০০০ বেশি ভোট। নতুন মুখ আবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থী। এই ফ্যাক্টরকেই কাজে লাগাতে চেয়েছে শাসক দল। কারণ কালিগঞ্জে নাসিরুদ্দিন আহমেদের ব্যাপক দাপট ছিল। লাল নামে পরিচিত ছিলেন এলাকায়। তাই উপনির্বাচনে লাল সাহাবের মেয়েকে প্রার্থী করে কেন্দ্র ধরে রাখতে চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
২০২১ সালে বিজেপি প্রার্থীকে
৪৬,৯৮৭ ভোটে পরাজিত করেছিলেন নাসিরুদ্দিন
২০১১ সালেও এই আসনটি জিতেছিলেন
২০১৬ সালে কংগ্রেসের কাছে হেরে যান
২০২১ সালেও সেকেন্ড বয়ের তকমা পেয়েছিল বিজেপি। এবারও সেই জায়গাটা ধরে রেখেছে গেরুয়া শিবির। ভোট পেয়েছে ৫২ হাজার ৪২৪টি।
আলিফা আহমেদ(তৃণমূল) ১,০২,১৭৯
আশিস ঘোষ (বিজেপি) ৫২, ৪২৪
কাবিলউদ্দিন শেখ (কংগ্রেস) ২৮,২৬২
দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখা ছাড়া বিজেপির কাছে এই ভোটের ফল খুব একটা আশানুরূপ নয়। কালিগঞ্জ ভোট কংগ্রেসের কাছে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা ছাড়া আর বিশেষ কিছু নয়। অতএব ভোটের হার বাড়িয়ে এখন ফিল গুড হাওয়া শাসক শিবিরে।