এক মুখ দাঁড়ি, বিধ্বস্ত চেহারা, এলোমেলো স্বভাব। একে বারে ছকভাঙা অভিষেক। সম্পূর্ণ ভিন্ন লুক। একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি যিনি স্মৃতিশক্তি হারানোর সঙ্গে লড়াই করছেন। ‘কালীধর লাপতা’ মুক্তির পর থেকেই প্রসংশিত অভিষেক বচ্চনের অভিনয়।
জুলেখা নাসরিন, সাংবাদিক- কালীধর একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি। যার এক মুখ দাঁড়ি, এলোমেলো স্বভাব। একেবারে বিধ্বস্ত চেহারা। যিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। একাধিক মানসিক সমস্যায় তিনি জর্জরিত। রয়েছে হ্যালুশিনেশনের সমস্যা। কালীধর স্মৃতিশক্তি হারানোর সঙ্গে লড়াই করছেন। এহেন কালীধরের চিকিৎসার খরচ আকাশছোঁয়া। আর সেটা বুঝতে পেরেই তাঁর ভাই-বোনেরা তাঁকে ত্যাগ করার পরিকল্পনা করে। এমনকি কালীধরকে কুম্ভমেলায় লক্ষ মানুষের ভিড়ে ছেড়ে দিয়ে আসার পরিকল্পনা করে তাঁর ভাই-বোনেরা।
ভাই-বোনদের সেই পরিকল্পনা কোনওভাবে বুঝতে পেরে যায় কলীধর। তখন সে পরিবার থেকে পালিয়ে গিয়ে যতটা সম্ভাব দূরে চলে চাওয়ার চেষ্টা করে। আশ্রয়ের জন্য একটি মন্দিরে ঠাঁই নেয় কালীধর। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় বছর আটেকের বল্লুর সঙ্গে। বল্লু অনাথ। তিনকুলে তাঁর কেউ নেই। আর কালীধরের পরিবার থেকেও নেই। ফলে বয়সের বিস্তর পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কালীধর আর বল্লুর মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বল্লু কালীধরকে ‘কেডি’ নামে ডাকে। ছোট্ট বল্লুর কাছে কালীধরই পৃথিবী। তাইতো কালীধর অসুস্থ হলে বল্লুকে বলতে শোনা যায়, ‘কালীধর আমার সবকিছু। ওকে দ্রুত সুস্থ করে দিন ডাক্তার।’
কালীধর চরিত্রে অভিষেক বচ্চনের টানটান অভিনয় মুগ্ধ করেছে পরিচালক থেকে শুরু করে প্রত্যেককে। পরিচালক টিনু আনন্দ অভিষেক বচ্চনের অভিনয়ে এতটাই উচ্ছ্বসিত যে, অমিতাভ বচ্চনকে তিনি টেকস্ট করেন। মেসেজে লেখেন, ‘স্যার জি, অভিষেকের নম্বর আমার কাছে নেই। আপনি আমার পক্ষ থেকে অভিষেককে অভিনন্দন জানিয়ে দেবেন। ‘কালীধর লাপতা’তে ও দারুণ অভিনয় করেছে।’ পরিচালকের সেই মেসেজ সমাজ মাধ্যমে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন সিনিয়র বচ্চন। ছেলের সাফল্যে তিনিও সমান খুশি। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিগ বি লিখেছেন, ‘যখন আমার প্রিয় বন্ধু এবং পরিচালক টিনু আনন্দের মতো কেউ এমন বার্তা পাঠান, তখন তা শব্দের চেয়েও বেশি কিছু প্রকাশ করে। আমি কৃতজ্ঞ।’
৪ জুলাই ওটিটি-তে মুক্তি পেয়েছে ‘কালীধর লাপতা’। কালীধরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন। বল্লুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দৈভিক বাঘেলা। সুবোধের চরিত্রে দেখা গিয়েছে মহম্মদ জিশান আইয়ুবকে। মধুলিকা জাটোলিয়া, প্রিয়াঙ্ক তিওয়ারির অভিনয়ও নজরকাড়া। এই ছবি দেখিয়েছে জীবনে খারাপ সময়ের পাশাপাশি ভালো সময়ও আসতে পারে। শুধু প্রয়োজন ধৈর্য্য, ভালোবাসা আর সঠিক সময়ের। সময় যে কোনও সময়ই চমক দেখাতে প্রস্তুত।