ক্রমশই খারাপ হচ্ছে হিমাচলের পরিস্থিতি। মঙ্গলবার লাগাতার মেঘভাঙা বৃষ্টি হচ্ছে হিমাচলে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও খারাপ হচ্ছে। হড়পা বানে ভেসে নিখোঁজ বহু মানুষ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বিপাশা নদী। এর জেরে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এই আবহে সোমবার সিমলার একটি পাঁচতলা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে বাড়ি ভেঙে পড়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মঙ্গলবার আরও বেড়েছে বৃষ্টির বেগ। অতিভারী বৃষ্টি চলছে সকাল থেকেই। একদিকে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এরসঙ্গে আছে একের পর এক ধস নামার খবর। যার জেরে রাজধানী সিমলা-সহ রাজ্যের সিংহভাগ এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে এখনও অবধি ২৫৯টি বড় রাস্তা জলের তলায় ফলে সেগুলি দিয়ে যানবাহন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। পানীয় জলের পাম্পগুলি জলে ডুবে আছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ না থাকাতেও সেগুলি সচল করা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার সকালে মন্ডী জেলার করসোগে পর পর চার বার মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় যার জেরে বসতি এলাকায় হুমড়মুড়িয়ে নেমে আসে হড়পা বান। তার জেরে বেশ কিছু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। নিখোঁজ অনেকে। এক জনের মৃত্যুর আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আইএমডির লাল সতর্কতার প্রেক্ষিতে রবিবারই কাংড়া, মান্ডি, সিরমৌর এবং সোলান জেলার ডেপুটি কমিশনারদের পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। হড়পা বান এবং ভূমিধসের মতো পরিস্থিতির জন্য সতর্ক থাকার বার্তাও দেওয়া হয়। সপ্তাহখানেক ধরেই একটানা ভারী বৃষ্টি চলছে হিমাচল প্রদেশে। ইতিমধ্যেই প্রবল বর্ষণে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।সে কারণেই আপাতত দু’দিন কুল্লু, কাংড়া, মান্ডি, সিরমৌর, সোলান প্রভৃতি জেলায় স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
এই অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসের কারণে স্তব্ধ কিতারপুর-মানালি জাতীয় সড়ক। যার প্রভাব পড়েছে যান চলাচলে। বহু যাত্রী রাতভর ওই টানেলে আটকা পড়েছিলেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে, প্রশাসনের তরফে মঙ্গলবার মান্ডি জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন এবং রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। বিপাশা নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সেই কারণে পান্ডোহ এবং লারজি বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে লারজি ও দাহর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।