কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের গভর্নিং বডি বৈঠকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এদিন বৈঠকে কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে কলেজের অস্থায়ীকর্মীর চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হল। পাশাপাশি গণধর্ষনে অভিযুক্ত কলেজের বর্তমান দুই পড়ুয়াকে কলেজ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ পরিচালন সমিতি। উচ্চশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্ণিং বডি। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তিরও দাবি করেছেন কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যরা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- উচ্চশিক্ষা দফতরের সুপারিশ মতো গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার কসবা ল কলেজে বৈঠকে বসেন গভর্নিং বডির ৬ সদস্য। এদিন বৈঠকে কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে কলেজের অস্থায়ী কর্মীর চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হল। একই সঙ্গে তার বার কাউন্সিলের লাইসেন্স বাতিলেরও সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান গভর্নিং বডির সদস্যরা। এছাড়া মনোজিৎ এর মতই গণধর্ষনে অভিযুক্ত কলেজের বর্তমান দুই পড়ুয়াকে কলেজ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ পরিচালন সমিতি। এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি যেহেতু কলেজ এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ তাই কলেজ খোলা রাখা নিয়েও এদিনের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্নিং বডি।
এই পরিস্থিতে কলেজ এখন বন্ধ রাখা থাকবে তবে সামনে যেহেতু পরীক্ষা তাই পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে কলেজের অফিস খোলা থাকবে। পড়ুয়ারা সেখানে পরীক্ষা সংক্রান্ত ফর্ম ফিলাপ থেকে যাবতীয় কাজ করতে পারবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। কসবাকাণ্ডে অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে ওই এজেন্সিকে। কলেজের নিরাপত্তা বাড়াতে আরও সিসিটিভি বসানো হবে। বহিরাগত যাতে কলেজে প্রবেশ না করে সেদিকে নজর দেওয়া হবে। কলেজের পড়ুয়াদের আই কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে। পাশাপাশি এগিয়ে আনা হল কলেজের সময়। আগে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত কলেজ খোলা থাকত । এখন সকাল ৭টা থেকে বেলা ২ পর্যন্ত কলেজ খোলা থাকবে। কলেজ শেষে কোনও পড়ুয়া কলেজের মধ্যে থাকতে পারবে না। মঙ্গলবারের গভর্নিং বডির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে গভর্নিং বডির কাছে যে সুপারিশগুলো করা হয়েছিল সেগুলি হল কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কলেজের অস্থায়ী কর্মী মনোজিৎ মিশ্রকে বহিষ্কার করতে হবে। কলেজের বর্তমান দুই পড়ুয়াকে বরখাস্ত করতে হবে। নিরাপত্তারক্ষীকে বহিষ্কার করতে হবে। কলেজের মধ্যে যাতে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে সে নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। নিরাপত্তারক্ষীটি যে যে সংস্থার ছিল সেই সংস্থা কে শোকজ করতে হবে। কলেজে কলেজে যে বিশাখা কমিটি বা ‘ইন্টারনাল কমপ্লেন্ট’ কমিটি আছে তাদের নিয়ে বৈঠকে বসতে হবে। কলেজ টাইম শেষ হওয়ার পর কলেজে থাকা যাবে না। কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে আরও সিসিটিভির প্রয়োজন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। এই বিষয়গুলি কার্যকারিতা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে।