কসবা কান্ড দেখিয়ে দিয়েছে শিক্ষাঙ্গনেও একটা মেয়ে নিরাপদ নন। সেখানেও তাঁর ওপর হতে পারে এরকম পাশবিক অত্যাচার। যত সময় গড়াচ্ছে মনোজিতের কুকীর্তির পর্দা ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এবার পুলিশের জেরায় সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আগামীতে যাতে ওই তরুণীকে লাগাতার ব্ল্যাকমেল করা যায় তাই ভিডিও করা হয়েছিল ধর্ষণের। পুলিশের জেরায় প্রমিত এবং জেইব এমনটাই জানিয়েছে। সোমবারই মনোজিত তাঁদের জানিয়েছিল ওই তরুণী ফর্ম ফিল আপ করতে এলে কোন অজুহাতে আটকে রাখতে। তারপর ঘনিষ্ঠ হবে মনোজিত আর সেই কারণেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তরুণী রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ করে এবং পরে যাতে আবার এই কাজ করতে পারে তাই জেইবকে ভিডিও করতে বলে। জেইব এবইং প্রমিতকেও ইউনিয়নের বড় পদের প্রলোভন দেখিয়েছিল।
পুলিশের জেরায় একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে। আচমকা এহেন অপরাধ করেনি মনোজিত। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রথমে সহবাস করার জন্য বলা হবে তরুণীকে, সে রাজি না হলে গার্ডরুমে ধর্ষণ করা হবে ছাত্রীকে। এমনই পৈশাচিক পরিকল্পনা ছিল মনোজিতের। আর এই সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের ভার দেওয়া হয়েছিল জেইব এবং প্রীতমকে। মনোজিতের কথা মতই গোটা সময়ের ভিডিও করে জেইব। দুই শাগরেদ জানিয়েছেন, সেদিন তাঁরা যা করেছিলেন, তা করেছিলেন ‘দাদা’র নির্দেশেই। প্রভাবশালী দাদার কথাতেই সবটা হয়েছিল সেদিন।
নির্যাতিতা তরুণী অভিযোগপত্রে লিখেছিলেন, ‘’তারা জোর করে আমাকে গার্ডের ঘরে নিয়ে যায়। ‘J’ আমাকে ধর্ষণ করে। আমি বাধা দিলে, সে আমাকে ব্ল্যাকমেল করে, হুমকি দেয়, যা সে আগে থেকেই করে আসছিল। সে আমাকে হুমকি দেয়, আমার বয়ফ্রেন্ডকে খুন করে দেবে, আমার মা-বাবাকে গ্রেফতার করিয়ে দেবে। তাও আমি বাধা দিই। তখন সে আমার দু’টো আপত্তিকর ভিডিও দেখায়, যেগুলো আমাকে ধর্ষণের সময় তোলা।“
পুলিশ সূত্রে খবর, দেড় মিনিটের সেই ফুটেজ পাওয়া গেছে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রর মোবাইল ফোন থেকে। যেখানে তরুণীকে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তবে শুধুমাত্র ফুটেজই নয়, নির্মম অত্যাচারের বড় সাক্ষী হয়ে উঠেছে ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা একাধিক সিসিটিভিও। কলেজের মেন গেটে ঢোকার মুখেই পিলারের গায়ে লাগানো রয়েছে এই ক্যামেরা। নির্যাতিতার অভিযোগ ছিল, ঘটনার সময় ইউনিয়ন রুমের বাইরে পাহারায় ছিলেন দুই আইন পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেইব আহমেদ।