মহিলা ভোট ব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত করতে সংরক্ষণের ট্রাম্প কার্ড নীতিশ কুমারের। সরকারি চাকরিতে ৩৫% নারী সংরক্ষণের ঘোষণা করলেন নীতিশ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ বিহারের ভোট, ভোটের বিহার। সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে এই মুহূর্তে পাখির চোখ বিহার। তাই যে যার মত করে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিতে শুরু করেছে। আর সেখানেই একবার মাস্টারস্ট্রোক দিলেন নীতিশ কুমার।
ভোটের আগে কার্যত কল্পতরু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। সামাজিক প্রকল্পে ভাতা বৃদ্ধির পর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, বিহারে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য এবার থেকে ৩৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ থাকবে। এর ফলে ভোটবাক্সে যে একটা ভালো প্রভাব পড়বে তা নিয়ে তিনি আশাবাদী।
নিঃসন্দেহে বিরোধী শিবিরকে টক্কর দিতে এটা একটা বড় চমক মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে নারী ক্ষমতায়ণের লক্ষ্যে বিহারে সমস্ত সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৫ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করা হবে সরকারের তরফে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের স্বার্থে ‘বিহার যুব কমিশন’ গঠনেরও ঘোষণা করেন নীতিশ।
তিনি বলেন, “মহিলা চাকরিপ্রার্থী, যাঁরা বিহারের আসল বাসিন্দা, তাঁদের জন্য রাজ্য সরকারের সমস্ত ধরনের পদে বিশেষ ৩৫ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে।” পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একটি পোস্ট করে নীতিশ জানান, বিহারের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আরও বেশি মহিলাকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতেই এই পদক্ষেপ করতে চলেছে বিহার সরকার। এই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের এই সিদ্ধান্তের একটাই লক্ষ্য রাজ্যের সমস্ত বিভাগের সরকারি চাকরিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো। আরও বেশি সংখ্যক মহিলা যাতে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে বিহারের শাসনব্যবস্থা ও প্রশাসনিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ পালন করেন সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, মহিলা ভোটারদের সংখ্যা ক্রমশই বেড়েছে বিহারে। আর সেকথা মাথায় রেখেই দরাজহস্ত হলেন নীতিশ কুমার। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে বেড়েছিল মহিলা ভোটারের সংখ্যা। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫৩ শতাংশ। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫৯.৪৫ শতাংশ। ‘ঘর ঘর দস্তক’ এবং ‘ঘর ঘর মাইকিং’-এর কারণেই মহিলা ভোটার সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব অমৃতলাল মীনা। গত ৩ বারের বিধানসভা নির্বাচনেও মহিলা ভোটারের সংখ্যা বিহারে পুরুষ ভোটারের তুলনায় বেশি। ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মহিলা ভোটারের পরিসংখ্যান ছিল ৫৯.৭ শতাংশ। পুরুষ ভোটারের পরিসংখ্যান ছিল ৫৪.৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিহারে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫১.১ শতাংশ। মহিলা ভোটার ৬০.৪ শতাংশ। ২০১০ সালে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫৩.৩ শতাংশ। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫৪.৫ শতাংশ।