আবারও আদালতের ধাক্কা স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি)। সাত দিনের মধ্যে নাহিদা সুলতানাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে চাকরিতে যোগদানের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে এসএসসিকে।
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- নদীয়ার ঝুরুলী আদর্শ বিদ্যাপীঠে নবম ও দশম শ্রেণিতে শিক্ষকতা করতেন নাহিদা সুলতানা। পরবর্তীতে আপার প্রাইমারির মেধা তালিকায় তাঁর নাম উঠে আসে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এসএসসি তাঁকে নতুন নিয়োগের অনুমোদন দেয়। নির্দেশ ছিল ৯০ দিনের মধ্যে নতুন স্কুলে—দক্ষিণ দিনাজপুরের লাঙ্গুলি ২ বানেশ্বরী জুনিয়র হাইস্কুলে—যোগ দেওয়ার। কিন্তু সে সময় তিনি নবম-দশম শ্রেণিতে কর্মরত থাকায় যোগ দিতে পারেননি। তাঁর আগের চাকরিটিও চলে যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, যা নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বহু শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে। সেই পরিস্থিতিতে নাহিদা এসএসসির কাছে আবেদন করেন, যাতে আপার প্রাইমারির নতুন নিয়োগে যোগদানের সময়সীমা বাড়ানো হয়। অভিযোগ, কমিশন সেই আবেদন গ্রহণ করেনি, বরং নিরুত্তর থেকেছে।
শুক্রবার মামলার শুনানিতে নাহিদার আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, নিয়ম অনুযায়ী এসএসসি বিশেষ ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়াতে পারে এবং নাহিদা যথাযথ নিয়ম মেনেই আবেদন করেছিলেন। তাঁর দাবি, এসএসসির গাফিলতিতেই একদিকে যেমন তিনি নতুন চাকরি পাননি, অন্যদিকে পুরনো চাকরিটিও হারিয়েছেন। অন্যদিকে, এসএসসির পক্ষের আইনজীবী ডঃ সুতনু পাত্র জানান, নাহিদা স্বেচ্ছায় নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগ দেননি। তাই তাঁর অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে এবং সময়সীমা বাড়ানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
উভয় পক্ষের সওয়াল শোনার পর বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এসএসসির উচিত ছিল বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা।’’ বিচারপতির মন্তব্য, নাহিদা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন, তা কমিশনের বিবেচনায় আনা উচিত ছিল। ফলে আদালতের নির্দেশ, এসএসসি সাত দিনের মধ্যে সময়সীমা বাড়িয়ে নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করবে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেবে, ওই সময়ের মধ্যেই নাহিদা সুলতানাকে নিয়োগপত্র তুলে দিতে।