২৫ জুন রাতে যখন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ঘটছে সেই নারকীয় অপরাধ তখন কলেজেই ছিলেন ভাইস প্রিন্সিপাল। তবুও টের পেলেন না কিছুই?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আবারও চাঞ্চল্যকর তথ্য কসবা কাণ্ডে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৫ জুন, যখন নিজের কলেজেই ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন ওই তরুণী তখন উপাধ্যক্ষ কলেজেই উপস্থিত ছিলেন। রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য আর প্লাসের হাতে। যাতে দেখা যাচ্ছে যে সেদিন তিনি রাত ৯.৫০এ কলেজ থেকে বেরোন। কিচ্ছু জানতে পারলেন না? সিসিটিভিও দেখলেন না? তার কাছেও তো একসেস ছিল। এমনকি মনোজিত সহ বাকি দুই পড়ুয়া কিংবা ওই তরুণী ও তার সহপাঠী কেন কলেজে আছেন কলেজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই প্রশ্নই বা কেন করেননি!?
রেজিস্ট্রার খাতায় দেখা যাচ্ছে ২৫ জুন সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটে কলেজে ঢুকেছিলেন নয়না চট্টোপাধ্যায়। এরপর আউট টাইমেও ৯টা ৫০ মিনিট লেখা। জুন মাসের ১ তারিখ থেকে ২৫ জুন রেজিস্টারে এম-পিএমের উল্লেখ করা নেই। কিন্তু কেন নেই? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আবার ওই দিনেই কেন অতক্ষণ কলেজে থাকলেন ভাইস প্রিন্সিপাল? গোটাটাই কি কাকতালীয়? রহস্য তৈরি হয়েছে তাই নিয়েও। এর পাশাপাশি তিনি যখন অতক্ষ্ণ কলেজে থাকলেন কেন সিসিটিভি দেখলেন না যে কেউ কলেজে আছে কিনা? কেন তরুণীর আর্তনাদ তার কানে গেল না? সেদিন যখন বেরতে গিয়ে দেখলেন মেন গেটের দরজা বন্ধ নিরাপত্তারক্ষী সেখানে নেই প্রশ্ন কি করেছিলেন? অর্থাৎ পরতে পরতে যেন স্পষ্ট হচ্ছে ভাইস প্রিন্সিপালের গাফিলতির বিষয়টা। সোমবার কলেজ খুলেছে তিনি যখন কলেজ থেকে বেরচ্ছেন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় এই বিষয়ে, তিনি জানান, গত ২৫ জুন তিনি সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে কলেজ ঢোকেন। সিলেবাস কমিটির বৈঠকের জন্য ১০টায় বেরিয়ে যান। যদিও রেজিস্টারে তাঁর সই নিয়ে কিছুই বলেনি ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়।
এর পাশাপাশি ২৬ জুন নাকি রেজিস্টারে এ এম-পিএমের উল্লেখ করেন নয়না চট্টোপাধ্যায়। ২৬ জুন তিনি রেজিস্টারে প্রথমে ইন টাইম উল্লেখ করেছিলেন সকাল সাড়ে ন’টা। পরে তা কেটে ১০টা ১৫ মিনিট করা হয়। আউট টাইমে লেখা ছিল রাত ৮ টা ৩০। পরে তা কেটে হাফ ডে ছুটি নেওয়ার বিষয় লেখা হয়। অন্যদিকে নয়না চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন তিনি এই ঘটনার বিষয়ে জানতেনা না। তিনি নাকি ঘটনার দু’দিন পরে ২৭ জুন কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীর থেকে এই গণধর্ষণের বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রার খাতা তো বলছে একেবারে অন্য কথা। এদিকে কলেজের সিসিটিভি ফুটেজের অ্যাক্সেস ভাইস প্রিন্সিপালের রুমে থাকে। এই আবহে ক্রমেই তাঁর দাবি ঘিরে প্রশ্নচিহ্ন উঠছে।