Date : 2024-04-30

মানব শরীরই ট্যাটু শিল্পের ক্যানভাস। সেই ক্যানভাসই করতে ভালোবাসেন পাহাড়ি ট্যাটু শিল্পী লেপচা পেট্রিক

শাহিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক:- স্মৃতিকে মনের মণিকোঠায় নয়, শরীরে খোদাই করতে ভালোবাসেন এমন বহু মানুষ আছেন। তাদের এই স্বপ্নকে পূরণ করতেই ট্যাটু শিল্প। জীবনের ভালোমন্দকে শরীরে চিরতরে আঁকার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখার নামই ট্যাটু। মানব শরীরে সেই ক্যানভাসই করতে ভালোবাসেন পাহাড়ি ট্যাটু শিল্পী লেপচা পেট্রিক।


ট্যাটু শিল্প আজকের নয়। এটা যুগ যুগান্তর থেকে চলে আসছে। দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন আদিবীসারা তাদের শরীরে আঁকিবুকি কাটতেন। সেটি এখন ট্যাটু শিল্পতে পরিণত হয়েছে। এককথায় বলা যেতেই পারে ট্রাইব্যাল আর্টই ট্যাটু শিল্প। ট্যাটু শিল্পকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন বহু মানুষ, তার মধ্যেই একজন হলেন ট্যাটু শিল্পী লেপচা পেট্রিক। মানুষের ত্বকই তাঁর কাছে চিত্রপট। সেই ত্বকের উপর নিপুণ হাতে যন্ত্র চালিয়ে ফুটিয়ে তোলেন বিভিন্ন নকশা। পাহাড়ি হলেও লেপচা এখন কলকাতাবাসী। ১০ বছর ধরে কলকাতাতে আছেন তিনি। ট্যাটুকেই নিজের পেশা ও নেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর ছোট্ট একটি স্টুডিও। আলো-আধাঁরি স্টুডিও সাজানো তাঁর হাতের কাজ দিয়ে। সেটা পেন্টিং হোক বা বিভিন্ন আর্ট, ক্রাফট। স্টুডিওতে ট্যাটু করতে আসা ব্যক্তিদের শরীরে নিজের আর্টকে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী।


কাগজে, দেওয়ালে পেইন্টিং করতে হলে রং-তুলির দরকার হয়। কিন্তু মানব শরীরে ট্যাটু করতে হলে রং , ট্যাটু মেশিন ও রাউটার পেন মেশিন। এই সব দিয়ে শরীরে জীবন্ত নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। ট্যাটু করার বিভিন্ন ধাপ আছে। ট্যাটু গড়তে পারিশ্রমিক কত? লেপচা জানালেন এক হাজার থেকে এক লাখ টাকাও পারিশ্রমিক হতে পারে।
শরীরে ট্যাটু করতে ভালোবাসেন ট্যাটু প্রেমী সঞ্জয় মন্ডল। শরীরের বেশিরভাগ অংশে রয়েছে ট্যাটু। নিজের শরীরে জীবনের ওঠাপড়াকে স্মৃতি হিসেবে খোদাই করে রেখেছেন সঞ্জয়।


তরুণ-তরুণীদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে বিপুল জনপ্রিয় হয় ওঠা এই আর্ট এখন পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে বহু আর্ট পড়ুয়ারা৤ ফলে বাড়ছে কর্মসংস্থান। রাজা তিরকি আর্ট নিয়ে পড়াশুনা করে ট্যাটুকেই বেছে নিয়েছেন পেশা রূপে।
ট্যাটু শিল্পকে গুরুত্ব দেন না অনেকে। কিন্তু ট্যাটুও একটি শিল্পকলা। শুধু তরুণরা নয়, পঞ্চাশার্ধ্ব মানুষও আসেন লেপচার কাছে ট্যাটু করাতে। ট্যাটু শুধু ফ্যাশন নয়, পেশাও হতে পারে। সেই রাস্তাই দেখাচ্ছেন এই লেপচা প্যাট্রিক, রাজা তিরকির মতো ট্যাটু শিল্পীরা।