Date : 2024-04-30

অন্ধকারে আলোর শহর। তবু হাসিমুখে শহরবাসী

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : আলোর জন্য যে শহরকে সারা পৃথিবী চেনে, জানে সেই শহরেই কিনা অন্ধকার ! তাও আবার ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা। তারপরেও শহরবাসীর হাসিমুখ। আসলে এটাই যে চন্দননগর বাসীর অহঙ্কার। আজ যে তাদের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন।

চন্দননগরকে সারা পৃথিবী চেনে তার জগদ্ধাত্রী পুজো ও লাইটের কারিকুরির জন্য। তবে শুধু জগদ্ধাত্রী পুজোর ক’দিনের ব্যাপার নয়, চন্দননগর বিখ্যাত তার জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করে বিসর্জন শোভাযাত্রার জন্যেও।
দেশ বিদেশ থেকে প্রচুর মানুষ আসেন এইদিন বিসর্জন শোভাযাত্রা দেখার জন্য‌। তা যে চন্দননগরের বিসর্জন শোভাযাত্রা দেখতে, আলোর খেলা দেখতে সারা পৃথিবী থেকে এত লোক আসেন সেই চন্দননগরেই কিনা সকাল দশটা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে প্রশাসন। আসলে এই বিসর্জন শোভাযাত্রায় প্রতিমা ও লাইটের যে বন্দোবস্ত হয় তা এতটা উঁচু যে তাতে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

অতীতে এই কারণে বেশ কয়েকবার দূর্ঘটনায় পড়তে হয়েছে। ফলে সেই থেকে প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় পুজো কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় বিসর্জনের দিন সারা শহরে পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। শহরবাসী‌ও সেই সিদ্ধান্তে সহমত জানায়। ফলে বিসর্জনের দিন এভাবেই বাড়ি অন্ধকারে রেখে রাস্তায় আলোর সৌন্দর্য দেখে কাটান চন্দননগর বাসি। তালডাঙ্গা মোড়ের বাসিন্দা বছর চৌষট্টির তপন প্রামানিক বললেন, “এটাই তো আমাদের গর্বের। এই গর্বের জন্য একদিন বিদ্যুৎ বিহীন থাকতে কোনো অসুবিধা নেই।” আঠাশ বছরের গৃহবধু নীলিমা দত্তের কথায়, “এই দিনটার জন্য তো সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। আমার বাপের বাড়ি কলকাতার সন্তোষপুরে। সেখানে তো এসব নেই। তাই বিয়ের পর এখানে এসে থেকে এটাই দেখছি। প্রতি বছরই মনে হয় নতুন দেখলাম। এই সময় তাই বাইরে কোথাও যাই না।” এদিকে নবম শ্রেণীর ছাত্রী সৌতৃষ্ণার আবার কষ্ট হচ্ছে ‘মা’ চলে যাচ্ছেন বলে। সারাদিন কারেন্ট নেই বলে কুছ পরোয়া নেই তার। সৌতৃষ্ণা জানালো, “লাইট থাকবে না তা তো আগে থেকেই জানি। তাই আগে থেকেই মোবাইল গুলোতে চার্জ দিয়ে রেখেছি। ছবি তুলতে হবে তো।”