রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ইসমাইল হানিয়ার পর এবার ইয়াহিয়া সিনওয়ার। গাজায় ইজরায়েলি হামলায় নিহত হামাস গোষ্ঠীর নতুন প্রধানও। বৃহস্পতিবার গাজায় অভিযান চালায় ইজরায়েলি সেনা। সেই হামলাতেই নিহত হয়েছেন হামাস প্রধান সিনওয়ার। প্রাথমিকভাবে হামাস প্রধানের মৃত্যু নিশ্চিত করা সম্ভব না হলেও মৃতদেহের ডিএনএ পরীক্ষার পর ইয়াহিয়া সিনওয়ার বলে জানা যাচ্ছে। ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর জানান। যদিও হামাস শিবিরের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর ড্রোন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর আগের মুহূর্ত। ড্রোনের সেই ফুটেজ দেখে চমকে উঠেছেন সকলে। ড্রোন ক্যামেরাবন্দি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ইজরায়েলি সোনার হামলায় চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ। বাড়ির মধ্যে সবকিছুই ধূলিসাৎ। তারই মধ্যে সোফায় বসে ধুঁকছেন একজন। কাপড় দিয়ে পুরো মুখ ঢাকা। সারা শরীর ধুলো মাখা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে শরীরে একাধিক চোট। ওঠারও শক্তি নেই। তবে আগে থেকে এটা ইয়াহিয়া কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত ছিল না ইজরায়েলি সেনা। বাঁ-হাত দিয়ে লাঠি মতো একটা কিছু ছুঁড়ে দেন ক্যামেরার দিকে। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলি সেনার টিম বিল্ডিং লক্ষ্য করে ট্যাঙ্ক থেকে শেল ছুঁড়ে দেয়। আর তারফলেই হামাস নেতা ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। ইজরায়েল প্রায় এক বছর ধরেই লক্ষ্য রাখছিল। সিনওয়ার সুড়ঙ্গে লুকিয়ে ছিল। ইজরায়েলি বাহিনীর মুখোমুখি লড়াইয়ের পর আহত হয়ে এই ভাঙা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল সে।
ইজরায়েলের তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল, তিন জঙ্গির মৃত্যুর খবর। তাঁদের মধ্যে একজন ইয়াহিয়া সিনওয়ার কি না, তা নিশ্চিত হতে পারছিল না ইজরায়েল। সেইজন্যই ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। এর আগেও তাঁর মৃত্যুর খবর ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। হামাসের মধ্যে তিনিই অন্যতম শক্তিশালী নেতা ছিলেন বলে মনে করা হয়। হামাস পলিটিক্যাল ব্যুরোর চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।তবে এরই মধ্যে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন লড়াই জারি থাকবে। তিনি বলেন, আজ আমরা হিসেব মিটিয়েছি। কিন্তু আমাদের সামনে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের লক্ষ্যে অটল থাকতে হবে ও আমাদের জনগণের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে।একইসঙ্গে হামাসকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, সব হামাস যোদ্ধার পরিণতি ইয়াহিয়া সিনওয়ারের চেয়েও খারাপ হবে। যতক্ষণ না আমাদের সমস্ত লোককে নিরাপদে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাব।ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর পর উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে ইজরায়েলে। সেনাবাহিনীকে রীতিমতো উদযাপন করতে দেখা গিয়েছে একটি ভিডিয়োতে।