পড়ুয়াদের অবসাদ কাটাতে ও পড়াশোনায় মনোযোগী করতে সরকারি স্কুলে বিশেষ উদ্যোগ। কেন পড়ুয়ারা অবসাদে ভুগছে তা নিয়ে কাউন্সেলিং সেশনের আয়োজন করা হয় হেয়ার স্কুলে। স্কুলের এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়ারা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: পড়ুয়াদের পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে ও অবসাদ কাটাতে প্রথমবার কোনও সরকারি স্কুলে কাউন্সেলিং সেশনের আয়োজন করা হয়েছিল। কোভিডের পর থেকেই পড়ুয়াদের মধ্যে অবসাদ ও অমনোযোগী লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। তার কারণ হিসেবে মনোবিদদের ধারণা কোভিডকালে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। স্কুল থেকে দূরে থাকা। ঘরের চার দেওয়ালে বন্দি থাকা। অনলাইনে ক্লাস করা। মোবাইলের প্রতি আশক্তিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।তার প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের মানসিকতায়। কোভিড পরবর্তী সময় থেকেই পড়ুয়াদের মানসিক অবসাদ কাটাতে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়ছিল। এবার প্রথমবার কোনও সরকারি স্কুল নিজেরাই পড়ুয়াদের মানসিক অবসাদ কাটাতে কাউন্সেলিং এর আয়োজন করল। এক বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে সপ্তাহ ব্যাপি চলে এই সেশন।
প্রসঙ্গত, করোনাকালে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সেই সময় প্রায় ২বছর বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিক পঠনপাঠন থেকে বহু ক্রোশ দূরে সরে যায় পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর হয়ে উঠেছিল অনলাইন ক্লাস। নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস হত পড়ুয়াদের। মুঠোফোনটাই হয়ে উঠেছে আস্ত একটা ক্লাসরুম। এরফলে বিশেষভাবে মুঠোফোনে আশক্ত হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। দীর্ঘদিন ধরে সহপাঠীদের থেকে দূরে থাকার ফলে এখন তার সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পড়ুয়াদের মনে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে হেয়ার স্কুলের তরফ থেকে কাউন্সেলিং সেশনের আয়োজন করা হয়।
প্রতিটি ক্লাসের পড়ুয়ারাই এই কাউন্সেলিং পর্বে অংশ গ্রহণ করে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন মাইতি-র বক্তব্য, বাচ্চাদের কন্সেন্ট্রেশন বিল্ডিং ও স্ট্রেস মুক্ত করতে বিশেষত কোভিড পরবর্তী সময়ে পড়ুয়াদের মধ্যে যে মানসিক পরিবর্তন ঘটেছে, বিশেষ করে কোভিডের সময় বদ্ধ ঘরে চুপচাপ থেকে মোবাইল ফোনে লেখাপড়া করতে হতো । এখন ক্লাসরুম টিচিং করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়ারা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না। এই স্ট্রেসটা কিভাবে কাটানো যায়? এই পরিবর্তনটা কিভাবে পজিটিভ দিকে আনা যায়? সেই চিন্তাভাবনা থেকেই প্রখ্যাত সংস্থা তাদেরকে নিয়ে এই প্রোগ্রামটা করা হচ্ছে। এই সেশনটা দেড় ঘন্টা চলছে। তাতে স্ট্রেসটা কেন তৈরি হয় এই অবসাদ থেকে কিভাবে মুক্ত রাখা যায়। তার জন্য আমাদের কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সারাদিনের মধ্যে যেকোনো সময় যদি পড়ুয়ারা দশটা মিনিট ব্যয় করে তাহলে তাঁরা যে পড়াটা তিন দিনে করে সেই পড়াটা তিন ঘন্টায় হয়ে যাবে। অনেক ডাক্তারবাবুরা আসছেন তারা পরামর্শ দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে হেয়ার স্কুলে মোটিভেশনাল ও স্ট্রেস মুক্তির অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।এই ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় খুশি পড়ুয়া থেকে অভিভাবক প্রত্যেকেই।