আইন করেছে কেন্দ্র সরকার। তাহলে সেই আইনের বিরোধীতা করতে গিয়ে কেন রাজ্যে অশান্তি পাকানো হচ্ছে, কেন দাঙ্গা লাগানো হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিষ্কার হুঁশিয়ারি “এখানে (বাংলায়) দাঙ্গায় যদি কেউ উস্কানি দেয়, তাহলে সে যেই হোক, হিন্দু হোক, মুসলিম হোক, শিখ হোক, ইশাই হোক, কাউকেই কিন্তু আমি ছাড়বো না।”
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধীতা করা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় অশান্তির আগুন জ্বলেছে। হয়েছে দাঙ্গাও। সেই দাঙ্গার দায় বিজেপি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দিকে ঠেলার পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিও কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম, মুয়াজ্জিনদের সভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আমরা সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। কিন্তু বাংলার মাটিতে বিজেপির কথায় উত্তেজিত হয়ে কেউ অশান্তি করতে চাইলে, প্লিজ তাকে কন্ট্রোল করুন।” এই আইন (ওয়াকফ সংশোধনী আইন) যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যা করেছে (কেন্দ্র সরকার), তা আমরা কেউ সমর্থন করি না, করবোও না।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই আইন কেন্দ্র সরকার করেছে, আমরা করি নি। যদি এই আইনের বিরোধীতা করে আন্দোলন করতে হয় তাহলে দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন করুন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাংলায় আন্দোলন করে লাভ নেই, দিল্লিতে গিয়ে করুন। প্রধানমন্ত্রী কে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে জানান।”
ওয়াকফ সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনকারীদের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন করুন। দরকার হলে রাস্তায় থাকবেন। আমি কথা দিচ্ছি আমার তৃণমূল কংগ্রেসের সব সাংসদরা আপনাদের সঙ্গে থাকবেন। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারাও আপনাদের পাশে থাকবেন।” পাশাপাশি আন্দোলন কারীরা মনে করলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামেও সভা করতে পারেন বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাইরে করবেন না। বাইরে করলে সেখানে বিজেপি লোক পাঠিয়ে ঝামেলা করবে।” পরিষ্কার হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দাঙ্গা যারা করবে তাদের একটাকেও আমি ছাড়বো না।” হিন্দু ভাই বোনেদের প্রতিও আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, “হিন্দু ভাই-বোনদের বলছি বিজেপির চক্রান্তে পা দেবেন না।” ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতাদের কাছেও আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইন্ডিয়া জোটের সবার কাছে আবেদন করব ওয়াকফ (সংশোধনী আইন) নিয়ে সবাইকে একসাথে প্রতিবাদ করতে হবে।”