গত সপ্তাহে (৮ এপ্রিল) মন্ত্রীসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের প্রতি কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেদিন তিনি বলেছিলেন কেন মন্ত্রীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় নন ? কেন বিরোধীদের পোষ্টের বিরোধীতা করে কেউ কিছু পোষ্ট করেন না ? এই বিষয়ে মন্ত্রীদের সক্রিয় হওয়ার যে পরামর্শ সেদিন মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন, এগারো দিন পর ঠিক সেই একই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করলেন কুণাল ঘোষ। তবে আরেকটু বিস্তারিত ভাবে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- শনি সকালে ফেসবুকে একটা দীর্ঘ পোষ্ট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম জনপ্রিয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পোষ্টের উপজীব্য হলো সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের পদাধীকারিদের নিষ্ক্রিয়তা। চাকরি হারা শিক্ষকদের ইস্যু হোক বা সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে হওয়া সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনা, দুই ক্ষেত্রই সরকারকে কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। দুটো ইস্যুতেই বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে লাগাতার আক্রমণ শানানো হয়েছে সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে। যার উত্তর সরকার সরকারের মতো করে দিয়েছে। কিন্তু এমন অবস্থায় শাসকদলের পক্ষে পাল্টা ন্যারেটিভ যতটা দেওয়া উচিত ছিলো, ততটা দেওয়া হচ্ছে না বলেই মত কুণাল ঘোষের। এক সপ্তাহ আগে মন্ত্রী সভার বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী ঠিক এই বিষয়েই নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।
এদিন কুণাল ঘোষ ফেসবুকে যে পোষ্ট করেছেন সেখানে তিনি লিখেছেন “সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি, দলীয় পদাধিকারীরাও দয়া করে কার্যকরীভাবে সক্রিয় হোন।” সোশ্যাল মিডিয়ায় শাসক দলের পক্ষে ব্যাট করার ক্ষেত্রে যারা সক্রিয় সেই অংশের কথা উল্লেখ করে কুণাল ঘোষ এর মন্তব্য, “যারা সক্রিয়, মজার কথা, তাদের মধ্যে নেতার থেকে কর্মী, সমর্থক বেশি।” কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন, নেতা হয়ে গেলে কি সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের হয়ে সওয়াল, তর্ক করতে সম্মানে লাগে ?”
দলীয় জনপ্রতিনিধি বা পদাধিকারীদের কিছুটা সতর্ক করেই কুণাল ঘোষ লিখেছেন, “দল আছে বলে আমরা যে যার জায়গায়। কোথাও আত্মসমালোচনা থাকতে পারে। দলের সব ঠিক থাকলে আমি সরব, সব গৌরবের অংশীদার; আর চলার পথে অপ্রিয় ইস্যু এলে আমি নীরব বা বিবেক; এটা হতে পারে না।” নিজেদের অবস্থানের দিক ইঙ্গিত করে চাঁচাছোলা ভাষায় কুণাল লিখেছেন,”একদল তুমুল গালমন্দ খেয়েও প্রচার করে যাবে, আর কিছু অংশ ইস্যুভিত্তিক জল মাপবে, সব ঠিক হয়ে গেলে আবার পোস্ট হবে, এটা দুর্ভাগ্যের। দলের ভালো প্রভাবটা নিতে গেলে, অপ্রিয় ইস্যুতেও থাকতে হবে। এটা জীবনের নিয়ম।”
শনি সকালে হঠাৎ করে কুণাল ঘোষের এত বড় পোষ্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অভ্যন্তরে। কুণাল ঘোষ কি একেবারেই নিজের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন, না কি দলেরই কোনো শীর্ষ নেতার মনোভাব নিজের লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন !