চাকরি হারা শিক্ষকদের সঙ্গে নেতাজি ইনডোরে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকের পর একপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর কথার উপর ভরসা রাখার কথা বললেও অপর একটি পক্ষ ছিলো না খুশ। তাদের পক্ষ থেকে ২১(এপ্রিল) তারিখ নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিলো। তবে কর্মসূচির দুই দিন আগে হঠাৎ করেই সেই ‘অভিযান (!)’ স্থগিত রাখার কথা জানালো চাকরি হারা শিক্ষকদের ঐক্য মঞ্চ।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক। যা নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য। চাকরি হারা দের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন বা কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই চাকরি হারা শিক্ষকদের একটি অংশ জানিয়েছিলো যে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে তাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে তারা ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযান করবেন। শনিবার হাওড়া কমিশনারেটের সিপি কে চিঠি দিয়ে সেই অভিযান ই আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা।
সুপ্রিম কোর্টের শেষ রায় অনুযায়ী এখনই চাকরি যাচ্ছে না ওইসব (যারা যোগ্য) শিক্ষকদের। সুপ্রিম কোর্ট ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত একটা সময়সীমা দিয়েছে, যা নিয়ে যোগ্য শিক্ষকেরা অনেকেই নিজেদের না খুশ মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। যদিও সেদিনই সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী আপাতত স্বস্তির কথা জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে চাকরি হারা সংগঠন অবশ্য তাদের প্রস্তাবিত ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচি নিয়ে অনড় ছিলেন। এবং এই কর্মসূচি নিয়ে পুলিশে আবেদন করা থেকে শুরু করে বেশ কয়েক দফা আলোচনাও তারা করেছিলেন বলে খবর। এমতাবস্থায় সোমবারের (২১ এপ্রিল) কর্মসূচির ঠিক দু’দিন আগে শনিবার পুলিশকে চিঠি দিয়ে তাদের সেই কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার (Temporarily Withdraw) করার কথা তারা জানিয়েছেন। ঐক্য মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশের শীর্ষকর্তারা তাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, দ্রুত সম্ভব যাতে তাঁদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে তারা জানাবেন। তাদের সব দাবিদাওয়া নিয়ে কথাও বলা হবে মুখ্যসচিবের সঙ্গে। এই আশ্বাসবার্তা পাওয়ার পরই তাঁরা নবান্ন অভিযান আপাতত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারকে দেওয়া চিঠিতে তারা এটাও লিখেছেন যে তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যথাশীঘ্র সম্ভব বৈঠকে বসতে চান। তারা (মঞ্চ) এটাও লিখেছেন যে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই তাদের সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাইছেন। এখন দেখার বিষয় ৭ (এপ্রিল) একবার বৈঠকে (ডিপ্রাইভড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন) করার পর মুখ্যমন্ত্রী এই চাকরি হারা ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আবার বৈঠক করেন কি না, বা বৈঠক হলেও সেই বৈঠক থেকে এই সমস্যা সমাধানের কোন পথ বের হয়।