ওয়েব ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন।
একদিকে প্রার্থী-প্রচার অন্যদিকে আক্রমন-পাল্টা আক্রমনে সরগরম দেশ-রাজ্য-রাজনীতি।
সব মিলিয়ে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবে সামিল হতে তৈরী দেশবাসী।
রাজনীতির উত্তাপে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও।
রাজ্যের ৪২ টি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
একেবারে আদাজল খেয়ে যেন প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা।
কারও হাতিয়ার পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান কারও আবার ঢালাও প্রতিশ্রুতি।
ভোটের উত্তাপ ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে মহানগর থেকে জেলায়। কি ভাবছে জেলা?
বিগত পাঁচ বছরে কতটা প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে?
আগামী দিনে ক্ষমতায় নতুন সরকার এলে তার কাছেই বা প্রত্যাশা কী?
মানুষের খবর নিতে আরপ্লাস নিউজ পৌঁছে গেছে একেবারে গ্রাউন্ড জিরোয়। আজ নজরে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র।
ভোটের ব্যারোমিটার
লোকসভা কেন্দ্র – বাঁকুড়া
প্রার্থী
তৃণমূল – সুব্রত মুখোপাধ্যায়
বিজেপি – ডঃ সুভাষ সরকার
সিপিএম – অমিয় পাত্র
এ যেন এক রুখা মাটির দেশ। কাঠফাটা রোদ্দুর জমিতে রুক্ষতার ফাটল এঁকেছে স্থানে স্থানে। একটা সময় দিনের আলো নিভে এলে গোটা এলাকাকে গ্রাস করত নিকষ অন্ধকার।
তবে এখন খরা কাটিয়ে পর্যটন মানচিত্রে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে বাঁকুড়া।
কিন্তু বন-জঙ্গলে ঘেরা এই বাঁকুড়ার গ্রামাঞ্চলে একসময় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মাওবাদ।
রাতের অন্ধকারে শোনা যেত ভারী বুটের শব্দ। জনপ্রতিনিধি খুঁজতে তাদের বিনিদ্র টহল চলত বারিকুল, ফুলকুসমা, রানিবাঁধ, সারেঙ্গার নানা অঞ্চলে।
আরপ্লাস নিউজ পৌঁছে গিয়েছিল ফুলকুসমা গ্রামাঞ্চলে। কতটা প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে সেখানকার মানুষের?
অনেকের মতে আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে।
রাস্তাঘাট হয়েছে,ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন অনেকে। পাণীয় জলের সমস্যাও মিটেছে কিছুটা। যদিও চিত্রটা সার্বিক নয়।
নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা কী?
দীর্ঘশ্বাস মাখা গলায় এক দিনমজুরের বক্তব্য “আমরা যেটা চাইব, সেটা কি আর পাব?”
১৯৫২ সাল থেকেই রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র।
একসময় সিপিএমের একছত্র আধিপত্য ছিল সেখানে।
এবার বাঁকুড়ায় মুখোমুখি তিন হেভিওয়েট প্রার্থী।
তৃণমূলের সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিজেপির ডঃ সুভাষ সরকার এবং সিপিএমের অমিয় পাত্র।
এবারের নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন তাঁরা, প্রচারে তাঁদের এক্স ফ্যাক্টরই বা কী জানালেন আর প্লাস নিউজের মুখোমুখি হয়ে…
তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতে এটা পঞ্চায়েত নির্বাচন বা অন্যান্য নির্বাচনের থেকে বেশ খানিকটা আলাদা। সেটার গুরুত্বই তাঁরা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের পারফর্ম্যান্স থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাজের খতিয়ান। তবে অন্যান্য প্রার্থীদের সঙ্গে নাকি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তফাত রয়েছে।
প্রচারে তিনি বলছেন,”আমি কাজ করে আপনাদের কাছে এসেছি, অন্যরা বলছেন তাঁরা কী করবেন?”
সুব্রতর বিপরীতে বিজেপির প্রার্থী ডঃ সুভাষ সরকার। পেশায় স্বনামধন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবন।
২০১৪-র মোদী ঝড় কি এবারও দেখা যাবে? উত্তরে বিজেপি প্রার্থীর প্রত্যয়ী জবাব, “২০১৪-র মোদী ঝড় এবার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। “
এরাজ্যে ৪২ টি আসনেও যে বিজেপির জয় নিশ্চিত সেবিষয়েও আত্মবিশ্বাসী তিনি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলায় সংস্কৃতি ও গণতন্ত্রের পুণঃ প্রতিষ্ঠা করবে এমনই দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে সিপিআইএম প্রার্থী অমিয় পাত্রের নির্বাচনী হাতিয়ার বেকারত্ব এবং কর্মসংস্থান। তাঁর বক্তব্য কেন্দ্র এবং রাজ্যে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি সরকার।
ঘটা করে শিল্প সন্মেলন করলেও কোন উদ্যোগী বিনিয়োগ করেননি।
সবমিলিয়ে ভোটের ব্যারোমিটারে পারদ চড়ছে। তৃণমূল, বিজেপি না সিপিএম। এবার বাঁকুড়ার হাল ধরবে কে?
সে প্রশ্নে অবশ্য কিছুটা হলেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পাল্লা ভারী।