৪০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করল পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা পর্ষদ। ছাত্র পরীক্ষার্থীর তুলনায় ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। হাইমাদ্রাসায় মেধাতালিকায় এগিয়ে মেয়েরা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: প্রকাশিত হল হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষার ফল। ৪০দিনের মাথায় ফল প্রকাশিত হল। ছাত্র পরীক্ষার্থীর তুলনায় ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা পর্ষদের অন্তর্গত হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে। আর পরীক্ষা শেষ হয়েছে ৫ মার্চ। রাজ্যজুড়ে ২০৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে। তিনটি বিভাগ মিলিয়ে এ বছর প্রায় ৬০ হাজার ৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল।মোট হাইমাদ্রাসায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪০৭৩ জন। আলিমের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১৫৮৮ জন। আর ফাজিলের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৭১৩জন।
হাই মাদ্রাসা আলিম ফাজিল মিলিয়ে ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৯.৬৬% আর ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০.৩৪%। হাইমাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল মিলিয়ে প্রথম দশে স্থান অধিকার করেছে ৩৭ জন। এর মধ্যে হাই মাদ্রাসায় ১৫ জন, আলিমে ১০ জন, ফাজিলে ১২জন। অর্থাৎ ৩৭ জনের তালিকায় ছাত্রী রয়েছে ১৬ জন এবং ছাত্রের সংখ্যা ২১জন। উল্লেখযোগ্য ভাবে হাই মাদ্রাসায় ছাত্রদের চাইতে ছাত্রীরা এগিয়ে। এতে প্রথম দশে ১৫ জনের নাম রয়েছে।যার মধ্যে ১২ জন ছাত্রী।
হাইমাদ্রাসায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৩ জন। যার মধ্যে পাশ করেছে ৩৯ হাজার ৮০৬ জন অর্থাৎ পাশের হার ৯০.৩২ শতাংশ। চলতি বছর যুগ্ম প্রথম হয়েছে হাই মাদ্রাসায়। মালদহের ফাহমিদা ইয়াসমিন ও শাহিদা পারভিন। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৭৮০। দ্বিতীয় হয়েছে মালদহের শ্যামসুন নেহার। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৬। তৃতীয় হয়েছে মালদহ থেকে আলিফনুর খাতুন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭২। হাইমাদ্রাসাতে মেধাতালিকায় ১৫জনের মধ্যে ১২জন ছাত্রী।
আলিমে মোট পরীক্ষার্থী ১১ হাজার ৫৮৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ৩০২, ছাত্রী ৫ হাজার ২৮৬ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ১০ হাজার ৭৫৫ জন অর্থাৎ পাশের হার ৯২.৮১ শতাংশ। প্রথম দশে রয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে আট জন ছাত্র ও দু’জন ছাত্রী। প্রথম হয়েছে মহম্মদ সৈয়দ আলম মণ্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৭৩। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৮৭০ নম্বর পেয়ে মাসুম বিল্লা গাজ়ি। তৃতীয় হয়েছে মহম্মদ ওমার ফারুক মণ্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮৫৩।
ফাজিলে মোট পরীক্ষার্থী ৪ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৬৩১, ছাত্রী ২ হাজার ৮২জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৪ হাজার ৩৯০ জন অর্থাৎ পাশের হার ৯৩.১৫ শতাংশ। প্রথম দশে রয়েছে ১২ জন। এর মধ্যে ৯জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী। প্রথম হয়েছে ইয়ামিন শেখ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৬২। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাইহান হোসেন ও বাকিবিল্লা গায়েন। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৯। তৃতীয় হয়েছে আব্দুল হালিম, তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৮।
জেলার ভিত্তিতে প্রথমে পূর্ব মেদিনীপুর (পাশের হার ৯৭.৫৪ শতাংশ)। দ্বিতীয় আলিপুরদুয়ার (পাশের হার ৯৫.৬৩ শতাংশ) এবং তৃতীয় হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (পাশের হার ৯৫.২১ শতাংশ)।পর্ষদ সভাপতি শেখ আবু তাহের কমরুদ্দিন জানিয়েছেন, যে চলতি বছর থেকে চালু হচ্ছে তৎকাল পিপিএস ও পিপিআর (স্ক্রুটিনি এবং রিভিউ)। আগামী সাত দিনের মধ্যে পিপিএস ও পিপিআর-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। যার ফলাফল ১৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবছরই ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথীর মত আরও বেশ কিছু প্রকল্পের জন্য ছাত্রী সংখ্যা বাড়ছে বলে মত পর্ষদের।