১৯৭১ সালের পর ফের একবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সার্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই আবহে মঙ্গলবার দেশের সব রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠক সারলেন কেন্দ্রিয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ্ মোহন। এই বৈঠকেই বাংলার সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে নেওয়া হয়েছে বেশকিছু সিদ্ধান্ত।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর দেশ জুড়েই এখন সাঁজো সাঁজো রব। পাকিস্তান কে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার জন্য সামরিক অভিযানের পথে হাঁটতে পারে ভারত। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে সব রকম প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। এরই অঙ্গ হিসাবে বুধবার দেশজুড়ে হতে চলছে অসামরিক মহড়া বা মক ড্রিল। তার আগে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ্ মোহন বৈঠক করলেন দেশের সব রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে। এই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ার কারণে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই রাজ্যের সীমান্ত জুড়ে রয়েছে নেপাল এবং ভুটান ও।
সূত্রের খবর, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মক ড্রিল সহ অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য রাজ্যকে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ্ মোহনের পৌরহিত্যে হওয়া বৈঠকে একথা রাজ্যকে জানানোর পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। রাজ্যের কোন কোন এলাকা অসুরক্ষিত (vulnerable) তা স্থির করে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্যে অবস্থিত সব গুরুত্বপূর্ণ ভবন, সেতু, বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এইসব কাজে অবশ্যই কেন্দ্র সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে। মক ড্রিলের ক্ষেত্রে (যা বুধবার শুরু হবে) সাতদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা ধরে ধরে সেটা করতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের সহযোগিতা কাম্য। তবে মূল মক ড্রিলে মূলতঃ নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোই অংশ নেবে। সঙ্গে থাকবেন প্রশাসনের আধিকারিকরা ও কিছু ক্ষেত্রে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা। এছাড়া রাজ্য প্রশাসনের কয়েকটি দফতরের ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ প্রশাসন অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র দফতর ছাড়াও স্বাস্থ্য দফতর, অগ্নি নির্বাপন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, পূর্ত দফতর প্রভৃতি।
যুদ্ধ বাঁধলে সব ধরনের ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের কাজের জন্য প্রয়োজন হয় স্যাটেলাইট ফোনের। এই মূহুর্তে রাজ্যের হাতে রয়েছে প্রায় ৬২ টি স্যাটেলাইট ফোন। যুদ্ধ বাঁধলে সাইরেন (war siren) বাজিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করা হয়। কলকাতায় মোট প্রায় ৯৫ টি এমন সাইরেন রয়েছে। জেলায় জেলায়ও রয়েছে কমবেশি ২৫ থেকে ৩০ টি সাইরেন। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হবে বিমান বাহিনী। এয়ারফোর্স প্রথম সতর্ক করবে সিভিল ডিফেন্স কে। রাজ্যের ক্ষেত্রে তা জানানো হবে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে। নবান্নে ২৪*৭ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। সেখান থেকেই জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠানো হবে। এদিনের বৈঠকে রাজ্যের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, সিভিল ডিফেন্স এর সচিব রাজেশ সিনহা ও ডিজি সিভিল ডিফেন্স জগমোহন।