ফুল বদলের এখনও ২৪ ঘন্টা কাটেনি। এরমধ্যেই মানহানির মামলার হুঁশিয়ারির মুখে জন বার্লা। বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ বার্লা করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতেই, শুক্রবার, তাঁর বিরুদ্ধে মানহানি ও ফৌজদারি মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে উকিলের নোটিশ পাঠালেন শুভেন্দু অধিকারী।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ার পর থেকেই বেসুরো গেয়ে যাচ্ছিলেন আলিপুরদুয়ার লোকসভার প্রাক্তণ বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। যে কোনো দিন দল ছাড়বেন এই জল্পনার মধ্যেই গত জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একমঞ্চে দেখা যায় এই প্রাক্তণ কেন্দ্রিয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তণ বিজেপি সাংসদকে। তবে সে যাত্রায় সরাসরি তৃণমূলে যোগ দেন নি তিনি। শেষমেষ চারমাসের মাথায় এসে বৃহস্পতিবার কলকাতার তৃণমূল ভবনে সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস ও জয়প্রকাশ মজুমদারের উপস্থিতিতে জন বার্লা জোড়াফুল শিবিরে যোগ দেন। আর তৃণমূলে যোগ দিয়েই নিজের পূর্বতন দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বার্লা। বিশেষ করে বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেই বেশি আক্রমণ করতে দেখা যায় জন বার্লাকে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বার্লা জানান, তিনি যখন সাংসদ ও মন্ত্রী ছিলেন সেই সময় আলিপুরদুয়ারে ১৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগে একটি হাসপাতাল করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিরোধী দলনেতা তাঁকে সেই কাজ করতে বিভিন্নভাবে বাঁধা দিয়েছিলেন। জন বার্লার এই মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মন্তব্য প্রত্যাহার করে জনসমক্ষে ও সংবাদ মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়ার কথা জানিয়ে জন বার্লা কে উকিলের চিঠি পাঠিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার সমাজমাধ্যমে নোটিশের প্রতিলিপি সহ পোষ্ট করে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, “গতকাল অলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, যাঁকে দল পুনরায় মনোনয়ন না দেওয়ায় উনি দল বদল করে চোরেদের দলে নাম লিখিয়েছেন, বিনিময়ে ওনার নতুন দলের মালিক, যাঁকে আমি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেছিলাম, ওনাকে খুশি করতে আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তিনি আগে থেকে আই-প্যাক এর লিখে দেওয়া চিত্রনাট্য মুখস্ত করে সর্বসমক্ষে আউড়েছেন।
এই মিথ্যা বক্তব্যের বিরুদ্ধে আমি আমার আইনজীবী শ্রী সূর্যনীল দাসের মাধ্যমে ওনাকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।
নোটিশে আমি নিম্নলিখিত দাবি জানিয়েছি:
ক) ৭ দিনের মধ্যে আমার কাছে লিখিতভাবে এবং প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে।
খ) এই ক্ষমাপ্রার্থনা প্রধান ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্রে এবং যে মিডিয়া চ্যানেলে এই মানহানিকর বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে, সেখানে প্রকাশ করতে হবে।
গ) ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া বা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
যদি এই দাবিগুলি পূরণ না হয়, তবে আমি দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হব।”
শুভেন্দু অধিকারীর এই হুঁশিয়ারি চিঠির বিষয়ে জন বার্লার মত জানতে চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। জন বার্লার মত পেলে অবশ্যই পরবর্তীকালে তা আপডেট করা হবে।