শরীরে ঘাম জমে ত্বকে চুলকানি, ৱ্যাশ বা ঘামাচির সমস্যা হয় অনেকেরই। ঘাম জমে হতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশনও। এই গরমে আরও যে সমস্যাটি দেখা যায় তা হল, নিকেল অ্যালার্জি। আংটি, চুড়ি, ঘড়ি বা অন্যান্য ধাতব কিছু থেকে এক রকমের চর্মরোগ হতে দেখা যায়।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক: মাঝে মধ্যে ২-১ পশলা বৃষ্টি হলেও গরম কমার কোনও সম্ভাবনাই নেই। শরীরে ঘাম জমে ত্বকে চুলকানি, ৱ্যাশ বা ঘামাচির সমস্যা হয় অনেকেরই। ঘাম জমে হতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশনও। এই গরমে আরও যে সমস্যাটি দেখা যায় তা হল, নিকেল অ্যালার্জি। আংটি, চুড়ি, ঘড়ি বা অন্যান্য ধাতব কিছু থেকে এক রকমের চর্মরোগ হতে দেখা যায়। ত্বকে জ্বালা, চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা যায়। কারও কারও ত্বকে বড় বড় ফোস্কা পড়ে। ত্বকের রংও বদলে যেতে পারে। ত্বকের নিকেল অ্যালার্জি কোনওভাবে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌছে গেলে তার থেকে এগজিমা হতে পারে। কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের মতো চর্মরোগের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। গরমে হিট ৱ্যাশের একটি ধরন হল নিকেল অ্যালার্জি, যা মূলত ধাতব জিনিস থেকে হয়। নিকেলের মাত্রা বেশি হারে রয়েছে এমন ধাতু যদি ত্বকের সংস্পর্শে কিছু বেশি সময় থাকে, তা থেকেই সেই জায়গায় ত্বকের রং বদলে নীলচে বা লালচে হয়ে যায়। সেখানে চুলকানি, ৱ্যাশ দেখা দেয়। ত্বকের ঘা বেড়ে যাবে। কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের মতো ত্বক শুষ্ক বা খসখসে হয়ে যায়।
নিকেল অ্যালার্জি থেকে কী কী হতে পারে?
১) গয়না- সোনা, টাইটানিয়াম, স্টেনলেস স্টিলের মতো ধাতব গয়না থেকে অ্যালার্জি বেশি হয়। এর থেকে কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হয়ে যেতে পারে।
২) পোশাক- জামাকাপড়ের বোতাম, জিপার থেকেও এরকম অ্যালার্জি হতে পারে।
৩) গৃহস্থালীর জিনিসপত্র- দৈনন্দিন ব্যবহারের যে সব সামগ্রীতে নিকেলের পরিমাণ বেশি, তার থেকেও এই ধরণের অ্যালার্জি হতে পারে।
৪) খাবার- নিকেলের মাত্রা বেশি এমন খাবার, খেলেও অ্যালার্জি হতে পারে ত্বকে। যেমন নানা ধরনের বাদাম, চকোলেট, কোকো পাউডার বেশি খেলে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে।
অ্যালার্জি সমস্যার সমাধান:
স্টেরয়েড বা কর্টিকোস্টেরয়েড দেওয়া ক্রিম বা লোশন লাগালে ৱ্যাশ কমতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই যে কোনও ক্রিম কেনা দরকার।
এছাড়া ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের ঘা কমানো যেতে পারে। দেখা যাক কী কী উপায়-
১) শসা-অ্যালো ভেরার প্যাক: ত্বকের যে জায়গাগুলিতে চামড়ায় লালচে ৱ্যাশ বা চুলকানি হয়েছে সেখানে শসা-অ্যালোভেরার প্যাক লাগালে আরাম হবে। একটি গোটা শসা মিক্সিতে ব্লেন্ড করে একটা থকথকে পেস্ট বানিয়ে তার সঙ্গে ২চা চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালভাবে মিশিয়ে ৱ্যাশের জায়গায় লাগিয়ে রাখলে সেখানকার ত্বক ঠান্ডা হবে, চুলকানি ও জ্বালা ভাব কমে যাবে।
২) দই-মধুর প্যাক: দই ও মধু, ২টিরই অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। মধু প্রদাহ নাশ করে। ২চা চামচ দইয়ের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ৱ্যাশের জায়গায় লাগাতে হবে। এতে সেই জায়গার ত্বক নরম হবে ও জ্বালা অনেক কমে যাবে।
৩) তরমুজের প্যাক: ত্বকের প্রদাহ কমাতে ও ত্বক আর্দ্র করে তুলতে তরমুজ অনন্য জায়গা নিয়েছে। এক কাপের মতো তরমুজ কুচি নিয়ে তা মিক্সারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই পেস্টটি ত্বকে লাগিয়ে রাখলে চুলকানি অনেক কমবে। ৱ্যাশের সমস্যাও দূর হবে।