গাজা এবং ইজরায়েলের যুদ্ধ অবস্থার কোন বদল হয়নি। সেই গাজায় এবার ইজরায়েলি হানায় একসঙ্গে ৯ সন্তানকে হারালেন এক চিকিৎসক মা। সেই সময় হাসপাতালে ডিউটি করছিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আলা-আল-নাজ্জার। আর এই কারণেই বেঁচে গেলেন তিনি। যদিও এই বেঁচে থাকা মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ নিজের সন্তানদের আধপোড়া, খণ্ডবিখণ্ড দেহাংশ তার হাসপাতালেই নিয়ে আসা হল।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ দক্ষিণ গাজার শহরে ধারাবাহিক ভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েলি বাহিনী। নাজ্জারের স্বামী এবং ১০ সন্তান বাড়িতে ছিলেন হামলার সময়। ইজরায়েলি বাহিনীর হামলায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে চিকিৎসকের বাড়ি। তাঁর ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃত সন্তানদের মধ্যে সকলেরই বয়স ৬-১২ বছরের মধ্যে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আলবোরশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারকে তাঁর কর্মস্থলে দিয়ে বাসায় ফেরেন তাঁর স্বামী হামদি। এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁদের বাসায় হামলা চালানো হয়।
শুক্রবার দিনভর গাজায় হামলা চালায় সেনা। যার জেরে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৭৬ জনের।দাবি করা হয়েছে, গাজার ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই ভয়ংকর অপুষ্টির শিকার। ত্রাণ না পৌঁছলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। এর পরই গাজার ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেয় ইজরায়েল। যদিও উত্তর গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি ইজরায়েলের তরফে।
গাজা ভূখণ্ডে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর জন্য বরাবরই প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের দিকেই দায় ঠেলে গিয়েছে ইজরায়েল। তাদের দাবি, সাধারণের বসতি এলাকায় সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে হামাস। তাই গাজ়াবাসীর মৃত্যুর জন্যও দায়ী হামাসই। শুক্রবারের হানায় চিকিৎসকের মৃত্যু নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও শনিবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। সেখানে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে গাজায় ১০০টিরও বেশি নিশানায় আঘাত হেনেছে ইজরায়েল।, শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ইজরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।