জাহাজে ২৪ জন নাবিক ছিলেন। সবাইকে সুরক্ষিভাবে উদ্ধার করা গেছে। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বা (Indian Coast Guard) সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিট নাগাদ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠায় লাইবেরিয়ার ওই পণ্যবাহী জাহাজ।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- আরব সাগরের কেরল উপকূলের কাছে ডুবল লাইবেরিয়ার একটি পণ্যবাহী জাহাজ। ওই জাহাজে ছিল ৬৪০টি কন্টেনার নিয়ে যাচ্ছিল। তার মধ্যে ১৩টি কন্টেনারে ছিল বিপজ্জনক বস্তু। সেই রাসায়নিক সমুদ্রের জলে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতি হতে পারে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে এবং মানুষের। ফলে এনিয়ে উদ্বিগ্ন কেরল সরকার এবং উপকূলরক্ষী বাহিনী। সেই সঙ্গে জাহাজের ট্যাঙ্কার থেকে তেল বেরিয়ে সমুদ্রের জলে ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণেই উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে কেরল সরকার।
জাহাজে ২৪ জন নাবিক ছিলেন। সবাইকে সুরক্ষিভাবে উদ্ধার করা গেছে। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বা (Indian Coast Guard) সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিট নাগাদ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠায় লাইবেরিয়ার ওই পণ্যবাহী জাহাজ। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে নেমে পড়ে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। রবিবার সকালে সেই জাহাজটি পুরোপুরি সমুদ্রে ডুবে গিয়েছে। আইসিজি (ICG) এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানায়, জাহাজে সওয়ার ২৪ জনের মধ্যে ২১ জনকে শনিবার উদ্ধার করেছে তারা। এর পরে উদ্ধার কাজে নামে ভারতীয় নৌবাহিনী। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ আইএনএস সুজাতা ডুবন্ত জাহাজ থেকে আরও তিন নাবিককে রবিবার উদ্ধার করে। জাহাজে ১৩টি বিপজ্জনক বস্তুর কন্টেনার ছিল। তার মধ্যে ১২টিতে ছিল ক্যালশিয়াম কার্বাইড। সেই সঙ্গে জাহাজের ট্যাঙ্কারে ছিল ৮৪.৪৪ মেট্রিক টন ডিজেল এবং ৩৬৭.১ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল। এই তেল সমুদ্রের জলে মিশলে কতটা বিপদ হতে পারে, তা স্পষ্ট।উপকূলরক্ষী বাহিনী জানায়, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
কেরল সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে এই বিপর্যয় মোকাবিলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সাধারণ মানুষকে সমুদ্রে নামতে সতর্ক করেছে। সমুদ্রে কোনও কিছু ভেসে এলে তা ধরতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, জাহাজ থেকে তেল ক্ষরণ রুখতে যৌথ ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে নৌসেনা এবং উপকূলরক্ষীবাহিনী। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।
পৃথিবী বিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীনে থাকা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশিয়ান ইনফরমেশন সার্ভিস জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে তেল ক্ষরণ শুরু হলে তা কেরলের আলাপুঝা, আম্বালাপুঝা, আরাট্টুপুঝা, কারুনাগাপল্লির সমুদ্র সৈকতে দূষণ ছড়াতে পারে। ক্ষরণ শুরু হওয়ার ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই বিপত্তি ঘটতে পারে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ক্যালসিয়াম কার্বাইড জলে মিশলে অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি করতে পারে। এই গ্যাসের সংস্পর্শে এলে সামুদ্রিক প্রাণী বা মানুষের স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিতে পারে।