অসম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম ও সিকিমে গত ২ দিনে প্রবল বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। পাশাপাশি ধস নামে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা এবং ভূমিধসের জন্য বহু এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- বিগত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অসম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম ও সিকিমে গত ২ দিনে প্রবল বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। পাশাপাশি ধস নামে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা এবং ভূমিধসের জন্য বহু এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হওয়ায় উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে ভারতের বায়ুসেনা এবং অসম রাইফেলসের আধিকারিকদের।
অসমের ১৯টি জেলার ৭৬৪টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে দুর্যোগের কারণে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাড়ি-ঘর সবই জলের তলায় চলে যাওয়ায় ঘরছাড়া বহু মানুষ। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি অসমের কাছাড় জেলায়। সেখানে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। এই সংখ্যাটা শ্রীভূমি জেলায় ৮৩ হাজার, নগাঁও জেলায় ৬২ হাজার, লখিমপুর জেলায় ৪৬ হাজার। অসম রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৫৫টি ত্রাণশিবিরে ৫৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। মণিপুরে ভারী বৃষ্টিতে সব থেকে ক্ষতি হয়েছে মণিপুরের সমতল এলাকার ২টি জেলা ইম্ফল পূর্ব এবং ইম্ফল পশ্চিমে। এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে প্রায় ১৫০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে গেছে সেনা। অরুণাচল প্রদেশে ৯ জনের প্রাণ গেছে ভূমিধসে। ধসে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পূর্ব কামেং জেলা এবং ২ জনের মৃত্যু হয়েছে জিরো ভ্যালিতে। ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের জন্য উত্তর সিকিমে আটকে রয়েছে প্রায় ১২০০ পর্যটক।
গত ২৯শে মে তিস্তা নদীতে পড়ে যায় পর্যটকদের একটি গাড়ি। গাড়িতে ছিলেন ১১ জন পর্যটক। তার মধ্যে আট জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। মেঘালয়ে হড়পা বানে বিপর্যস্ত ১০টি জেলা। ত্রিপুরাতেও বন্যা পরিস্থিতি। রবিবার অসম, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং মণিপুরের রাজ্যপালকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফ থেকে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে। রয়েছে ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও বলে মৌসম ভবন সূত্রে খবর।