অমানবিকতা এবং নৃশংসতার এক চরম নিদর্শন দেখাল বিহার। এক দলিত শিশু, প্রথমে তাঁকে নির্মম ভাবে ধর্ষণ করা হল তারপর গলায় চলল ছুরির কোপ, পরিবার তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে অপেক্ষা করতে হল প্রায় ঘণ্টা পাঁচেক। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গেল শিশুটি।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ভোট্মুখী বিহারে ভয়াবহ নির্মমতা। এক দলিত শিশুকে ধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাটে তার গলায় চালানো হল ছুরির কোপ। চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ার ফলে শেষমেশ প্রাণরক্ষা হল না শিশুটির। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিহারের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল।
গত ২৬শে মে বিহারের মুজফফরপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা তাঁর কাকিমার বাড়িতে খেলা করছিল। সেখানেই রোহিত সাহনি নামে এক ব্যক্তি তাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে পাশের একটি ভুট্টা খেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এখানেই শেষ নয়, এরপরে প্রমাণ লোপাট করতে ছুরি দিয়ে ওই নাবালিকার গলা কেটে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত রোহিত শিশুটির বাড়ির কাছেই মাছ বিক্রি করে। ঘটনার সময় বাচ্চাটির মা বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন, ঘুমজ থেকে উঠে দীর্ঘক্ষণ মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় নাবালিকার খোঁজ শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর ভুট্টা খেত থেকে ওই নাবালিকাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাতে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয় তাকে। সেখানে গিয়ে হাসপাতালে তরফে প্রথমে বলা হয় বেড নেই ফলে দীর্ঘক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সেই শুইয়ে রাখা হয় শিশুটিকে, তার অবস্থার অবনতি ঘটে যায় আরও। অনেক ক্ষণ পর অবশেষে চিকিৎসা শুরু হয়। আইসিইউতে রেখে তার চিকিৎসা হলেও শেষরক্ষা হয়নি, মৃত্যু হয় শিশুটির।
যদিও এই চিকিৎসায় গাফিলতির কথা মানতে নারাজ হাসপাতাল। এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। পিএমসিএইচের ইনচার্জ সুপারিনটেনডেন্ট অভিজিৎ সিং বলেছেন, ‘নির্যাতিতাকে যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসায় দেরির অভিযোগ ভিত্তিহীন। ধর্ষণের পর ছুরি দিয়ে ওই নাবালিকার বুকে ও গলায় আঘাত করা হয়েছিল। এমনকী ভোকাল কড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কথা পারছিল না নির্যাতিতা।
রাহুল গান্ধী এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত লজ্জাজনক’ বলে জানিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার বালিকাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তার জীবন বাঁচাতেও গাফিলতি করেছে। গোটা বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে আরজেডি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছে, ‘ধনী এবং গরিবের মধ্যে বিভেদ করে যে প্রশাসন, তা জিতে গিয়েছে। মানবিকতা হারিয়েছে’।