গরম পড়তেই প্রায় সব বাড়িতেই দুইবেলা কর এসি চলছে। আর দৈনিক কাজের ফাঁকে তা পরিষ্কার করার সময়ও হয়ে উঠছে না? এই আবহেই বাড়ির খুদের জ্বর সর্দি কাশি, চিকিৎসক সমস্ত পরীক্ষা করে জানালেন নিউমোনিয়া। আপনি হয়ত ভাবছেন যে এসি চালানোর ফলেই এটা হল, আদতে কিন্তু তা নয়, বরং অপরিচ্ছন্ন এসিই ডেকে আনছে বিপদ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ অপরিষ্কার এসির মাধ্যমে শিশুদের বিরল নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এসির ঠান্ডা হাওয়া এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এক জীবাণু জন্মায়, যা কারণ হতে পারে নিউমোনিয়ার। চিকিৎসকরা শিশুদের ক্ষেত্রে এসি ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে এবং এই তীব্র গরমে নিয়মিত এসি যাতে পরিষ্কার করাও হয় সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা বলছেন।
দীর্ঘদিন এসির সার্ভিসিং না করিয়ে ব্যবহার করলে লিজিওনেল্লা নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া জন্মায় এসির স্যাঁতসেঁতে ডাক্টে। গরম কালে অনেক বাড়িতেই প্রায় সারা রাত এসি চালানো হয়। সেই সময় ওই ব্যাকটিরিয়া ঢুকে পড়ে ফুসফুসে। তা থেকে একটা তীব্র দমবন্ধ করা কাশি দেখা যায়। বিরল একটা নিউমোনিয়া বাসা বাঁধে ফুসফুসে। আর মূলত শিশুরাই এই নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এসির পরিষ্কার আবশ্যক এর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকা শিশুর জন্য এমনিও ক্ষতিকারক।
বাইরে তীব্র গরম অথচ ঘরে ঢুকলেই এসির ঠান্ডা হাওয়া। তাপমাত্রার এই বৈপরীত্যে, মাথাচাড়া দিচ্ছে এই ভাইরাস। তাপমাত্রার ওঠানামায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করছে না। গরম থেকে ফিরেই আইসক্রিম খাওয়া এই জন্য বিপজ্জনক। এতে গলার তাপমাত্রাটা একধাক্কায় অনেকটা নেমে যায়। মুখের মধ্যে যে জীবাণু ছিল সেগুলো প্যাথোজেনিক হয়ে সংক্রমণ মাথাচাড়া দেয়।
আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সুস্মিতা কুণ্ডুর কথায় , ‘এসি ঠিকমতো তাপমাত্রায় ব্যবহার করতে না পারলে সমস্যা তো হবেই৷ আর নতুন এসি কেনা হলে অধিকাংশ সময়েই পরিমিতভাবে এয়ার কন্ডিশন মেশিন ব্যবহার করা হয় না৷ আর মনে রাখতে হবে , এসিতে জমা ধূলিকণায় অ্যালার্জেন্ট মজুত থাকে৷ ’ বাইরের তাপমাত্রা বাড়লে ঘর ঠান্ডা করতে তো এসি কম তাপমাত্রায় চালাতেই হবে৷ চিকিত্সকেরা বলছেন শরীরকে সুস্থ রাখতে আনুমানিক ২৪ -২৮ ডিগ্রির মধ্যেই এসির তাপমাত্রা রাখা বৈজ্ঞানিক৷