১৮ বছরের অপেক্ষা শেষে আইপিএল জিতেছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আর সেই জয়ের উদযাপনে মৃত্যু মিছিল। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বুধবার আরসিবির কাপ জয়ের সেলিব্রেশন ছিল সেই কারণে দুপুর থেকে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েক লক্ষ সমর্থক আর সেই ভিড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে ছিল মাত্র কয়েক হাজার পুলিশ। আচমকা শুরু হয় হুড়োহুড়ি। পদপিষ্ট হয়ে এখনও অবধি মৃত্যু হল কমপক্ষে ১১ জনের। আহত বহু।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক: জয় উদযাপনে বিরাট বিপর্যয়। ১৮ বছরের অপেক্ষার পর দল আইপিএল জিতেছে তাই সমস্ত সমর্থক চেয়েছিলেন সেই সেলিব্রেশনের সাক্ষী হতে। বহু মানুষের কাছেই স্টেডিয়ামে ঢোকার পাস ছিল না কিন্তু তারাও স্টেডিয়ামে ঢুকতে যান আর তখনই ঘটে যায় এই চরম বিপর্যয়।
হুড়োহুড়ি ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান অনেকেই। তাদের ওপর দিয়েই চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন বাকিরা। যারা পড়ে গিয়েছিলেন তারা আর উঠতে পারেননি ফলতঃ পদপিষ্ট হয়ে মারা যান তাঁরা। গুরুতর জখম ৫০ জনেরও বেশি। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি যাদের কাছে পাশ নেই তারা যখন ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। সেই সময় স্টেডিয়ামের বাইরে হাজার হাজার মানুষ। তাঁরা ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। তাতেই এই দুর্ঘটনা।
ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে পুলিশের ভূমিকা এবং পুলিশের উপস্থিতি নিয়েও কারণ লাখ লাখ মানুষকে সামলানোর জন্য মাত্র ৫০০০ পুলিশ! ইতিমধ্যেই এই বিশৃঙ্খলার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার বলেছেন, “কত জন হতাহত হয়েছে তা এখনই বলতে পারব না। আমি স্টেডিয়ামে যাচ্ছি। আমরা ভিড় সামলাতে পারিনি। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৫০০০ নিরাপত্তারক্ষী ছিল। তার পরেও পরিস্থিতি সামলানো যায়নি। তার জন্য ক্ষমা চাইছি।” জানা গিয়েছে, হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিন্নাস্বামীর বাইরে যখন এই ঘটনা ঘটছে তখন বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটারেরা বিধান সৌধে উপস্থিত ছিলেন। কোহলিদের প্রত্যেকের গায়ে লাল টি-শার্টে লেখা চ্যাম্পিয়ন্স। সেখানে কোহলি-সহ প্রত্যেককে সম্মান জানান কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। পরানো হয় পাগড়ি ও মালাও। যদিও বৃষ্টি নামায় সেই অনুষ্ঠান তাড়াতাড়ি শেষ করতে হয়। বিধান সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে যান কোহলিরা। যখন বাইরে এই ঘটনা ঘটছে তখন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছিল। এরকম এক বিপর্যয়ের কথা শুনেও সেলিব্রেশন থামানোর নির্দেশ দেননি সিদ্দারামাইয়া।