স্কন্দপূরাণের বর্ণিত রয়েছে, পূরীর জগন্নাথ দেবের মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বছরেই রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই স্নানযাত্রার সূচনা করেছিলেন। হিন্দুধর্মে বিশ্বাস , জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণীমা তিথিতে, অর্থাৎ স্নানযাত্রার দিন জগন্নাথ দেবের দর্শন করলে বিশেষ পূণ্যলাভ হয়ে থাকে।
প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক- প্রতিবছরই রথযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীতে ভিড় জমান পূণ্যার্থীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, এমনকি বিদেশ থেকেও আসেন বহু পূণ্যার্থী। সবাই যে পূণ্যার্জনের জন্যই আসেন, তা কিন্তু নয়। অনেকেই আসেন বিষয়টা ঠিক কী তা নিজের চোখে দেখার জন্য। তবে রথযাত্রা কিন্তু, শুধুমাত্র একদিনের উৎসব নয়। এই উৎসবের সূচনা হয় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই। কারণ বৈষ্ণব পঞ্জিকা মতে ওই দিন থেকেই শুরু হয় প্রভু জগন্নাথ দেবের চন্দনযাত্রা। আর সেই দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় জগবন্ধুর রথের প্রস্তুতিপর্ব। তিন ভাইবোনেরই রয়েছে পৃথক রথ। সেকথা পরে জানাবো। আজকের আলোচনা স্নানযাত্রার ইতিহাস ও তার গুরুত্ব নিয়ে।
স্কন্দপূরাণের বর্ণিত রয়েছে, পূরীর জগন্নাথ দেবের মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বছরেই রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই স্নানযাত্রার সূচনা করেছিলেন। হিন্দুধর্মে বিশ্বাস , জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণীমা তিথিতে, অর্থাৎ স্নানযাত্রার দিন জগন্নাথ দেবের দর্শন করলে বিশেষ পূণ্যাভ হয়ে থাকে। আরও একটা কারণ অবশ্য রয়েছে, এই দিনের পর থেকে প্রভু এক পক্ষকাল কাউকে দর্শন দেন না। স্নানযাত্রার ঠিক আগের দিন সন্ধ্যায় জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রা সহ সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহ গর্ভগৃহ থেকে বের করে শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে আসা হয় স্নানবেদীতে।
জৈষ্ঠ্যমাসের পূর্ণীমা তিথির বিশেষ সময়ে উত্তর দিকের কূপ থেকে জল নিয়ে এসে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে শুদ্ধিকরণ শেষে ১০৮ কলসি জল দিয়ে স্নান করানো হয় তিন বিগ্রহকে। সেই সন্ধ্যায় স্নানের শেষে দিন ভাইবোনকে গণপতির রূপে সাজানো হয়। একেবারে হস্তির মুখ বিশিষ্ট বিশেষ ধরনের মুকুট সাজে সজ্জিত করা হয় বলে এই বেশকে গজবেশ বলা হয়ে থাকে। এদিকে, ১০৮ কলসি জল দিয়ে স্নান করানোর ফলে জগবন্ধুর জ্বর আসে। তাই রাজবৈদ্যের চিকিৎসাধীনে গোপন একটি ঘরে রাখা হয় তাঁদের। ফলে এই পক্ষকালে মূল মন্দিরে পটচিত্র রাখা হয় তিন ভাইবোনের। সেখানে ভক্তকূল দর্শন করতে পারেন। এদিকে বিশ্বাস, রাজবৈদ্যের তৈরি বিশেষ পাচন খেয়ে ক্রমেই সুস্থ হয়ে ওঠেন প্রভু জগন্নাথদেব। আর তার পরেই …. রথে চেপে মাসির বাড়ি।