প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। মাত্র কয়েকদিনেই যেভাবে আক্রান্ত বেড়েছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এই মুহূর্তে আক্রান্তের নিরিখে এই রাজ্য রয়েছে তৃতীয় স্থানে।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক: কোনভাবেই উপেক্ষা করা যাচ্ছে না করোনার রক্তচক্ষু। দেশে আক্রান্ত বেড়ে ৫৩৬৪ জন। আক্রান্তের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রাজ্য।
এই মুহূর্তে এই রাজ্যে করোনার গ্রাফ একেবারে ঊর্ধ্বমুখী। দেশের অবস্থাও ভয়াবহ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯৮ জন। যার জেরে ভারতে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৬৪। একদিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। দেশের মধ্যে করোনার দাপট সবচেয়ে বেশি কেরালায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৭৯। একদিনে আক্রান্ত ১৯২ গুজরাটে আক্রান্তের সংখ্যা ৬১৫। একদিনে আক্রান্ত ১০৭, আক্রান্তের নিরিখে গুজরাট দ্বিতিয়। দিল্লিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯২ জন। মহারাষ্ট্রে ৫৪৮ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।
চোখ রাখা যাক এই রাজ্যের দিকে। এই মুহূর্তে আক্রান্তের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ তিন নম্বরে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে যেভাবে সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে তাতে ভয় দুশ্চিন্তা সমস্তই বাড়ছে। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে এক জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যুও হয়েছে। এক সাত মাসের শিশুর কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর আরও ভয় বাড়াচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় আরও বেড়েছে সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫৮ জন। রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯৬ জন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে একজন সদ্যজাত ও অন্যজন কিশোর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত গড়িয়ার ২ বছরের শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক। বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি শিশুটি। করোনা আক্রান্ত নিউ আলিপুরের ১০ বছরের এক কিশোরও।
৩০ মে থেকে ৪ জুন। রাজ্যের করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩০ মে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮৯ জন। নতুন করে ৮২ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল ৩১ মে। পয়লা জুন রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৪৪ জন। মঙ্গলবার দোসরা জুন রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪১ জন। রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে এম আর বাঙুর হাসপাতালে। কোভিড রোগীদের জন্য ৩৫ কেবিন আলাদা করা হয়েছে। ১০ শয্যার CCU চালু করা হয়েছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের জন্য র্যািপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা হয়েছে এম আর বাঙুর হাসপাতালে। স্বাস্থ্য ভবনের কাছে কোভিড পরীক্ষারজন্য বাড়তি কিট চেয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কোভিডের JN.1 সাব-ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কিছু লক্ষণের কথা জানিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে: গলা ব্যথা, ঘুমের সমস্যা, সর্দি,কাশি, মাথাব্যথা, দুর্বলতা বা ক্লান্তি, পেশীতে ব্যথা।
চিকিৎসকদের মতে, ‘কাশি, গলা ব্যথা, হাঁচি, ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা হল সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এমন কিছু লক্ষণ, তবে এগুলো ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণও হতে পারে, তাই আগে পরীক্ষা করে নিন।’ বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে কাশি, গলা ব্যথা, হাঁচি, ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা দেখা গিয়েছে।
করোনা কী করতে পারে ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। একটা বেডের জন্য এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতাল পাগলের মতো ছুটেছেন রোগীর পরিজনেরা। চারিদিকে শুধু শোনা গেছে স্বজনহারানোর কান্না আর হাহাকার। আর যেন সেই ছবি ফিরে না আসে তাই সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে বারবার।