বয়স হয়েছে অনেকটা। এখন আর গতরে খেটে কিছু করতে পারেন না। শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ। হাঁটা চলাও বিশেষ করতে পারেন না। ফলে যদি কেউ কিছু খাবার দেন, তাহলেই পেটে কিছু পড়ে। না হলে….
শিব শংকর চ্যাটার্জি, দক্ষিণ দিনাজপুর- দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন বিধানসভার ৫ নম্বর দ্বীপখন্ডা অঞ্চলের এনায়েতপুর গ্রাম। শহরের চাকচিক্য থেকে অনেকটাই দুরের এই গ্রামে থাকেন বৃদ্ধা মুখি সোরেন। থাকেন বললে বোধহয় ভুল বলা হবে। বলা যেতে পারে, জীবনের শেষ অঙ্কের শেষের অপেক্ষায় রয়েছেন। একটা ভাঙা মাটির দেওয়ালে একটা ত্রিপল টাঙিয়ে কোনোমতে মাথা গুঁজে আছেন মুখি। বৃদ্ধা মুখির একমাত্র সম্বল ঘরটি আগুনে পুড়ে যায়। তারপর গ্রামের কেউ তাকে একটা ত্রিপল দিয়েছিলো। এখন ওই ঘরেরই একটি দেওয়ালের গায় ত্রিপল টাঙিয়ে দিনাতিপাত করছেন সহায় সম্বলহীন এই বৃদ্ধা।
খেটে খাওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছেন মুখি। ফলে এখন গ্রামের মানুষ যদি কখনও কিছু দেন, তাহলে সেদিন কিছু খাওয়া জোটে। অন্যথায় ভুখা পেটে অনাহারে রাত কাটান বৃদ্ধা। সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তিনি। বৃদ্ধা মুখির নেই কোনো আধার কার্ড, নেই ভোটার কার্ড, এমনকি রেশন কার্ড টুকুও নেই তার। নেই, নাকি হারিয়ে ফেলেছেন ? না কি আগুনে পুড়ে গিয়েছে ? তেমনভাবে সঠিক কোনো উত্তরও জানেন না অসহায় এই বৃদ্ধা মহিলা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের কিছু যুবক ‘সাহায্যের হাত’ নামে একটি এনজিও(non government organisations) চালান। তারাই খুঁজে পেয়েছেন এই বৃদ্ধাকে। তারা সাধ্যমতো কিছু খাবারের ব্যবস্থা করেছেন বৃদ্ধা মুখি সোরেনের জন্য। দারিদ্রতার চরম পর্যায়ে থাকা তপনের মুখি সোরেনকে কি তার শেষ জীবনটা এইভাবেই কাটাতে হবে ?