দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তীব্র গরমে নাজেহাল পরিস্থিতি । প্রচন্ড গরমে স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে খুদেরা। তাই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে গরমের জন্য দুদিন স্কুলের পঠন- পাঠন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করল স্কুল শিক্ষা দফতর।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- একই সঙ্গে বঙ্গের আবহাওয়ার দুই রূপ। একদিকে যখন উত্তরবঙ্গে বর্ষা অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গ পুড়ছে রোদে। তীব্র দাবদহে নাজেহাল পরিস্থিতি। এমনকি দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমি জেলাগুলিতে কোথাও কোথাও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই আবহে বেশ কিছু দিন ধরেই কয়েকটি জেলায় প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস মর্নিং শিফটে করার কথা ঘোষণা করা হয়। এবার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তীব্র গরমের হাত থেকে পড়ুয়াদের রেহায় দিতে দুদিন অর্থাৎ ১৩ ও ১৪জুন স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করল স্কুলশিক্ষা দফতর।
দীর্ঘ গরমের ছুটি শেষ করে চলতি মাসের ২ তারিখ খুলেছে স্কুল। কিন্তু এই ক’দিনেই তীব্র গরমে নাজেহাল হচ্ছিল পড়ুয়ারা। এমন কি অসুস্থও হয়ে পড়ছিল তারা। তীব্র গরম ও তাপপ্রবাহের হাত থেকে প্রাইমারির পড়ুয়াদের বাঁচাতে মর্নিং শিফটে ক্লাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করে বাঁকুড়া, পূর্বমেদিনীপুর, পুরুলিয়া সহ বেশ কয়েকটি জেলা প্রাথমিক সংসদ। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস বেলার পরিবর্তে সোম থেকে শুক্র সকাল ০৬.৩০ টা থেকে ১১.০০ টা পর্যন্ত হবে এবং শনিবার ০৬.৩০ টা থেকে ০৯.০০ টা পর্যন্ত হবে।
জানা গেছে এরপর দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তবে পার্বত্য জেলা বাদ দিয়ে সামগ্রিকভাবেই ১৩ ও ১৪ জুন এই দুদিনের জন্য ছুটির কথা ঘোষণা করল স্কুল শিক্ষা দফতর। শিক্ষামন্ত্রী সমাজমাধ্যমে জানান, “কিছু জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি রয়েছে বলে জানা গেছে।তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ১৩.০৬.২৫ এবং ১৪.০৬.২৫ তারিখে রাজ্যের (পার্বত্য এলাকা ব্যতীত) সমস্ত সরকারি ও সরকার পোষিত প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট বোর্ড ও সংসদ কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।” তারপরেই স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এভাবে হঠাৎ স্কুল ছুটির ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকমহলের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি- র সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, ” এপ্রিল মাসের ৩০তারিখ থেকে যখন গরমের ছুটি ঘোষণা করেছিল তখনি আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম এতো আগে ভাগে গরমের ছুটি কেন দেওয়া হলো। পুরো মে মাসই যথেষ্ট ভালো আবহাওয়া ছিলো। আর ঠিক যখন প্রচন্ড গরম ও আদ্র পরিস্থিতি তখন স্কুল খুলে রেখেছে। কেন ২তারিখে স্কুল খোলা হয়েছিল!এই খামখেয়ালপনা বন্ধ করে পুরো বিষয়টা স্কুলে র হাতে আগামী দিন ছেড়ে দেওয়া হোক।” যদিও বিজ্ঞপ্তিতে আপাতত দুদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের জন্য কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি। যা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে শিক্ষকমহলে।