ইরানের ওপর ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। যার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে এই মুহূর্তে ভয়ংকর অস্থিরতা, বেড়ে গিয়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। তবে ইরানের ওপর ইজরায়েলের এই হামলার আড়ালে কোথাও কোন ভাবে কি ট্রাম্পের হাত আছে? আচমকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন কর্মীদের সরানোর নির্দেশ দেওয়ার পিছনে কোন কারণ লুকিয়ে?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ইজরায়েলের এই এয়ার স্ট্রাইকের পরেই কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই হামলার নেপথ্যে কি হাত রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের? কারণ ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এক বিবৃতির পর এই জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে। গত বুধবার একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘পশ্চিম এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে মার্কিনি সেনাদের পরিবারের সদস্য ও কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন আধিকারিকদেরও পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি দূতাবাস থেকে অন্যত্র সরানো হচ্ছে কারণ ওই জায়গাটি ভয়ঙ্কর স্থান হয়ে উঠতে পারে। আমরা পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখছি তাই কর্মীদের আপাতত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সূত্রের খবর, ইরাকে থাকা মার্কিন দূতাবাস থেকে আংশিক কর্মীদের ও কূটনীতিকদের সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে এর সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তারপরেই ইরানের ওপর এই ভয়ংকর হামলা করে ইজরায়েল। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন ইজরায়েলের এই হামলার ব্যাপারে আগে থেকে জানতেন ট্রাম্প আর সম্ভবত সেই কারণেই পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন আধিকারিকদের সরিয়ে নেয় ওয়াশিংটন। মনে করা হচ্ছে আমেরিকার সাহায্য ছাড়া ইজরায়েলের পক্ষে ওই ভাবে হামলা চালানো অসম্ভব। মাটির অনেক গভীরে রয়েছে ইরানের কয়েকটি পরমাণু কেন্দ্র। তাই সেখানে হামলা চালানোর জন্য বিশেষ বোমার প্রয়োজন। তাই ইজরায়েলের আমেরিকার সাহায্য ভীষণ ভাবেই দরকার।
ইজরায়েলের এয়ার স্ট্রাইকের পরেই আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো বলেন, ‘ইরানের ওপর ইজরায়েলের হামলার ঘটনায় কোনভাবেই আমেরিকা জড়িত নয়। ইজরায়েল জানিয়েছে যে, তাদের আত্মরক্ষার স্বার্থে এই বিমানহানা জরুরি ছিল।তাই ইরান যেন পাল্টা আক্রমণে আমেরিকার স্বার্থে আঘাত না করে’। ইরানকে নিয়ে মুখ খুলেছেন ট্রাম্পও, তিনি বলেছেন, ‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারে না। এটা খুব সহজ কথা, ওদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না। আমরা কোনওভাবেই তাতে অনুমতি দেব না’।
দুই দেশের এই যুদ্ধ পরিস্থিতির আবহে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ভারত দু’ পক্ষকেই যেকোনও উত্তেজনাকর পদক্ষেপ এড়াতে আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতির উত্তেজনা কমানো এবং দু দেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের জন্য কথোপকথন এবং কূটনৈতিক আলোচনার কথাও বলেছে ভারত। ভারত দু’ দেশের সঙ্গে সু সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত’।