সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল আমেদাবাদ। এক ধাক্কায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারালেন। কিন্তু কিভাবে ঘটল একটা এত বড় দুর্ঘটনা? খতিয়ে দেখতে গঠন করা হল এক উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কমিটিকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও এখনও অবধি জানা যায়নি কেন ঘটল্ এত বড় এক বিপর্যয়। এখনও একাধিক বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ যদিও জানিয়ে দিয়েছে যে বিমানের ইঞ্জিনে পাখির ধাক্কাতেই ‘দুর্ঘটনা’। কিন্তু, একাধিক বিশেষজ্ঞ বলছেন বাস্তব পরিস্থিতি সেই দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় তাই বারবার উঠে আসছে গাফিলতির তত্ত্বও। আর এই তত্ত্ব যত জোরালো হচ্ছে তত কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়ছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই উচ্চস্তরীয় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। একই সঙ্গে বিমান রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মেও বদল আসতে পারে বলে খবর।
শুক্রবার গভীর রাতে মন্ত্রকের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে জানানো হয়েছে যে এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমনটা জানা যাচ্ছে এই তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব এবং বাকি সদস্য হিসাবে থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকেরাও এবং থাকবেন আমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার, বায়ুসেনার ডিজি, সিভিল অ্যাভিয়েশনের ডিজি, ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিক, আইবির স্পেশ্যাল ডিরেক্টর। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার যাতে কোনভাবেই পুনরাবৃত্তি না ঘটে অর্থাৎ আগামীতে বিমান দুর্ঘটনা রুখতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বা প্রশাসনিক প্রস্তাব দেবে এই কমিটি। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার পৃথকভাবে তদন্ত করছে ডিজিসিএ এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের অধীন এয়ারক্রাফ্ট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। আমেরিকা সরকারের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এবং ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্মিলিতভাবে আমেরিকা থেকে এই তদন্ত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে।
বিমান দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে প্রাক্তন ন্যাশনাল এরোস্পেস ল্যাবরেটরিস কর্তার অনুমান, বিমানে জ্বালানির সমস্যার ফলে ইঞ্জিনের কাজ ব্যাহত হয়ে থাকতে পারে৷ তিনি জানিয়েছেন প্রথমে তদন্ত কমিটিকে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার খুঁজে বের করতে হবে। সেখান থেকে মেমরি কার্ডটি বের করে সেটিকে উদ্ধার করতে হবে, যা পুনরায় চালানো যাবে এবং তারপর বিশ্লেষণ শুরু করার জন্য ডেটাটি একটি কম্পিউটারে ডাউনলোড করতে হবে। একইভাবে, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার থেকে ডেটা পাওয়ার পর কী কথোপকথন হয়েছে তা দেখার জন্য দুটিকে সিঙ্ক্রোনাইজ করার চেষ্টা করা হবে ৷ তারপরে এই দুর্ঘটনার মূল কারণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করা হবে।