এ এক অবিশ্বাস্য রহস্য। ১১-এ নম্বরের টিকিট মিলিয়ে দিল দুই মেরুর দুই ভাগ্যবান মানুষকে। ভয়ঙ্কর বিমান দূর্ঘটনায় পড়েও প্রানে বেঁচে গেছেন এই একই নম্বরের টিকিটের দুই দুইজন মানুষ।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- ভারতের মধ্যে এত বড় বিমান দূর্ঘটনা এই প্রথম। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে ভয়ংকর বিমান দূর্ঘটনা ঘটার পর সিউরে উঠেছে গোটা দেশের মানুষ। এই মর্মান্তিক দৃশ্য টিভির পর্দায় দেখে স্তম্ভিত ও মর্মাহত হয় দেশের মানুষ । যাত্রী এবং ক্রু মেম্বার মিলিয়ে মোট ২৪২ জন নিয়ে বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাচ্ছিল। টেক অফের কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটি দূর্ঘটনাগ্রস্থ হয়। এই বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত হয়। তবে অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে গিয়েছেন ওই বিমানের একজন যাত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসকুমার রমেশ। রমেশের আসনের নম্বর ছিল ১১এ। ইতিমধ্যেই সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই আসনের টিকিট। আশ্চর্যজনক ভাবে এই টিকিটের নম্বর জুড়ে দিল ২৭ বছর আগের এক অবিশ্বাস্য ঘটনাকে।
আজ থেকে ২৭ বছর আগে এক বিমান দূর্ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গেছিলেন এক থাই অভিনেতা। তাঁর টিকিটের নম্বর ছিল ১১এ! এতবছরের ব্যবধানের একটা টিকিটের নম্বর দুই সময়বিন্দুকে এভাবেই মিলিয়ে দিল, দুই বিমান দুর্ঘটনা। ১১এ এই নম্বরের আসনে বসা দু’জন ভাগ্যবান মানুষই প্রানে রক্ষা পেয়েছে। অনেক সময় সিনেমার পর্দায় এই ধরনের ঘটনা দেখে থাকি। সিনেমাতে বা টিভির পর্দায় সবই সম্ভব বলে আমাদের মনে হয়। কিন্তু সেই ধরনের রহস্য যে বাস্তবেও ঘটতে পারে তা প্রমান করল এই ঘটনা।
উল্লেখ্য, সালটা ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর, থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট নম্বর টিজি২৬১-এর যাত্রী ছিলেন বছর কুড়ির অভিনেতা রুয়াংস্যাক লয়চুয়াস্ক। দক্ষিণ থাইল্যান্ডে অবতরণ করতে গিয়ে ভেঙে পড়ে বিমানটি। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন যাত্রীর মধ্যে ১০১ জনেরই মৃত্যু হয়। এই দূর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান অভিনেতা রুয়াংস্যাক। আশ্চর্যজনক ভাবে রুয়াংস্যাকের বিমানের টিকিটের নম্বর ছিল ১১এ। আহমেদাবাদে এই বিমান দূর্ঘটনার পর অবিশ্বাস্যভাবে রমেশের বেঁচে যাওয়ার খবর প্রচারের পর ফেসবুকে অভিনেতা রুয়াংস্যাক পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি। তিনিও একই আসনে বসেছিলেন আমার মতো। ১১এ।’ ৪৭ বছরের অভিনেতা আরও জানিয়েছেন, খবরটা জেনে তাঁর কার্যতই রোমাঞ্চ হচ্ছিল। এক মুহূর্তে ২৭ বছর আগে ফেলে আসা অতীত যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল।
আহমেদাবাদের বিমান দূর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা একমাত্র যাত্রী ৪৫ বছরের বিশ্বাসকুমার রমেশ। তিনি জানান,”“টেক অফের ঠিক ৩০ সেকেন্ড পরই বিকট শব্দ শুনতে পেলাম। তারপরই বিমানটা ভেঙে পড়ল। ভীষণ দ্রুত সবকিছু ঘটে গেল। আমি কীভাবে ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম জানি না।” এই বিমান দূর্ঘটনায় রমেশ হারিয়েছেন তাঁর সহযাত্রী তথা ভাই অজয় কুমার রমেশেে। তিনি বসেছিলেন অন্য রোয়ে।ধ্বংসস্তূপ থেকে নিজের ভাইকে খুঁজে বের করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বাসকুমার রমেশের ধ্বংস স্তুুপ থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে হাসপাতাল সূত্র খবর, তাঁর বুকে চোট লেগেছে। এখন তিনি চিকিৎসাধীন।