অতিরিক্ত ভিড়, সরু সেতু, পুরনো কাঠামোতেই বিপর্যয়; উপেক্ষিত ছিল, হুঁশিয়ারি বোর্ড। দু’বছর আগে গ্রামবাসীরা পিডব্লুডি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতকে চিঠি দিয়ে মেরামতির দাবি জানিয়েছিলেন। কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- রবিবার দুপুরে মহারাষ্ট্রের পুনের তালেগাঁওয়ের কাছে ইন্দ্রায়নী নদীর ওপর একটি লোহার সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল অন্তত ৪ জনের। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে। মৃত ও আহতদের অধিকাংশই পর্যটক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ৩টা ১৫ মিনিট নাগাদ হঠাৎই সেতুটি ভেঙে পড়ে। তার ঠিক আগে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে কাঁপছিল সেতুটি। প্রবল বৃষ্টির কারণে নদী ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল। তার মধ্যেই সেতুর উপর ভিড় করেছিলেন ১০০-র বেশি মানুষ ও বেশ কয়েকটি বাইক। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সেতুটির প্রস্থ ছিল মাত্র চার ফুট। ওই সরু সেতুতে একসঙ্গে এত মানুষ ও যানবাহনের ওঠার কোনও অনুমতি ছিল না। সতর্কতামূলক বোর্ডও লাগানো ছিল। তবু তা উপেক্ষা করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, বহুদিন ধরেই সেতুটি জর্জরিত ছিল। গর্ত তৈরি হয়েছিল, যা অস্থায়ীভাবে সিমেন্ট ব্লক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। দুটি বাইকের ধাক্কা থেকেই দুর্ঘটনার সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন সেতুটির কোনও স্ট্রাকচারাল অডিট গত কয়েক বছরে করেনি। দু’বছর আগে গ্রামবাসীরা পিডব্লুডি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতকে চিঠি দিয়ে মেরামতির দাবি জানিয়েছিলেন। কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিপর্যয়ের আগে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ এক বাসিন্দা পুলিশের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অতিরিক্ত ভিড়ের খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ভিড় সরালেও কিছুক্ষণ পর আবার বহু মানুষ সেতুতে ভিড় করেন। বিজেপি বিধায়ক ও মন্ত্রী রবীন্দ্র চবন গত বছর সেতু সংস্কারের জন্য ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছিলেন, কিন্তু সেই অর্থ ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ। মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার জানিয়েছেন, “প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, সেতুটি পুরনো এমনকি সেতুতে মরচে পড়েছিল। অতিরিক্ত ভিড়ের চাপেই সেটি ভেঙে পড়ে।” তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে নতুন একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। প্রশাসনের গাফিলতি ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতার মিশ্রণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।