মাম্পি রায়, সাংবাদিক- যুদ্ধের আঁচে ক্রমশ তপ্ত হচ্ছে ইরান-ইসরায়েলের সম্পর্ক। সেই আঁচেই কার্যত ছক্কা হাঁকাচ্ছে তেলের দাম। সঙ্কটের আশঙ্কায় প্রহর গুনছে বিশ্ব অর্থনীতি।
ইরান জানাচ্ছে তেহরানে তেলের ডিপোকে নিশানা করেছে ইসরেয়েল। রবিবার মধ্যরাতের পরে তেহরানের শাহরান তেল ডিপোয় আগুন লাগে। এই নিয়ে ইরান জানিয়েছে, শনিবার ইজরায়েলি হামলায় এই তেল ডিপোকে নিশানা করা হয়েছিল। স্থানীয় শানা সমাচার এজেন্সি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের তেল মন্ত্রক। ইরান আরও জানাচ্ছে, যে ট্যাঙ্ককে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে, সেই ট্যাঙ্কে খুব বেশি পরিমাণে তেল ছিল না। শনিবারও একে অপরের উপর তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিল ইরান ও ইসরায়েল। এর ফলে উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যে। লড়াইয়ের আঁচ টের পাচ্ছে ভারতও। দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ চলতে থাকলে অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশ ছোঁবে। উপসাগরীয় দেশ লাগোয়া একাধিক বাণিজ্যে সমুদ্রপথও বন্ধ হতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লেও তার প্রভাব এখনও ভারতের তেলের বাজারে পড়বে না। কারণ, বর্তমানে অশোধিত তেলের জন্য ভারত ইরানের উপর তেমন একটা নির্ভরশীল নয়। সেক্ষেত্রে সস্তার রুশ তেলই ভারতকে পথ দেখাবে।
রুশ তেল সস্তায় পাওয়া যায়। সেই কারণে চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়ার থেকে দৈনিক ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছে ভারত। বিশ্বের তেল আমদানিকারী দেশগুলির মধ্যে প্রথম তিনের মধ্যে রয়েছে ভারত। মে মাসে সব মিলিয়ে দৈনিক ৫১ লক্ষ ব্যারেল তেল কিনেছে ভারত। এর মধ্যে সিংহভাগ অর্থাৎ ৩৭-৩৮ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইরাক। মে মাসে দৈনিক ১২ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল সরবরাহ করেছে ইরাক।
অয়েল প্রাইস ডট কমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জুন ভোরে ইরানে ইজ়রায়েলের হামলার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
এক দিনের মধ্যে প্রায় ৫ ইউএস ডলার বেড়ে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ৭৪ থেকে ৭৫ ইউএস ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে। শনিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬ ইউএস ডলার বেড়ে ব্যারেল পিছু ৭৮ ইউএস ডলার হয়েছে। যুদ্ধ খুব তাড়াতাড়ি যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ৯০ থেকে ৯৫ ডলার ছাড়াতেই পারে মনে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।