সোমবার সকাল থেকেই বিধানসভায় ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নজর রেখেছিলেন খিদিরপুর বাজারে অগ্নিকান্ডের পরিস্থিতির দিকে। বিধানসভা সামলে নিয়েই ছুটলেন খিদিরপুর বাজারে। নিজের মানবিকতার নজির আরও একবার রেখে খিদিরপুর বাজারে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের জন্য ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করলেন তিনি।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ খিদিরপুর গিয়ে বাজার ঘুরে দেখেন তিনি। অরুপ বিশ্বাস ইন্দ্রনীল সেন ছিলেন তাঁর সঙ্গে। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কি সেই ক্ষতিপূরণ? মমতা জানান, লিস্ট করা হবে কাদের পুরো দোকান জ্বলে গিয়েছে, কাদের অর্ধেক। যাদের পুরো দোকান জ্বলে গিয়েছে, তাঁদের দোকান বানিয়ে দেওয়া হবে, ও ব্যবসার কাচামাল কেনার জন্য ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। যাদের অর্ধেক দোকান পুড়েছে, তাদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার আগে সার্ভে রিপোর্ট সামনে আসতে হবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্কলকে অনুরোধ করেন দমকলকে যেন তার কাজ করতে দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যতক্ষণ না আগুন পুরো নিভছে ধোঁয়া কমছে কেউ যেন ভেতরে না যান। জল সরবারহের যাতে অসুবিধা না হয় সেকারণে ওয়াটার ট্যাংকের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। দমকলকে বলেন কিছু বাইক রাখতে যেগুলো গলিতে ঢুকে কাজ করতে সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এবার সমস্ত নিয়ম মেনে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নতুন মার্কেট বানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর এরকম কোনও ঘটনা না ঘটে। আর নতুন বাজার তৈরি করে দেবে খোদ রাজ্য সরকার, এদিন তাও সাফ জানিয়ে দেন মমতা। নতুন বাজার তৈরির জন্য,আপাতত বাজার স্থানান্তর করা হবে। কাউন্সিলর এবং মেয়র মিলে সেই জায়গা ঠিক করেছেন। নতুন বাজার তৈরির আগে, নিকটবর্তী ওই স্থানেই অস্থায়ী বাজার স্থানান্তরিত হবে। নতুন তৈরি হওয়া বাজারে থাকবে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা। মমতা জানান বাজারে যারা সিলিন্ডার রেখেছেন তাঁদের সেই সিলিন্ডার নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা করতে হবে না হলে জীবন সংশয়ও হতে পারে।
কিন্তু কীভাবে ঘটল একটা এত বড় অগ্নিকাণ্ড তা এখনও স্পষ্ট নয়। দমকলকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট কিংবা দাহ্য বস্তু থেকেই আগুন লেগেছে। সেক্ষেত্রে সিলিন্ডার লিক করে অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁর যেখানে দোকান ছিল, তাঁর দোকান সেখানেই গড়ে দেওয়া হবে। একজনও বাইরের কেউ ঢুকবে না। তবে তার আগে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে, কীভাবে আগুন, কার দোকানের কতখানি ক্ষতি হয়েছে। এজন্য এলাকাটি ব্যারিকেড করে রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।