কবে কিভাবে কোন পথে শান্ত হবে মধ্যপ্রাচ্য? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হলেও তা পাওয় যাচ্ছে না। একদিকে ট্রাম্প যখন তেহরান খালি করার নির্দেশ দিয়ে জি-৭ থেকে তড়িঘড়ি ফিরছেন ঠিক সেই আবহেই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন ইরানের ধর্মীয় নেতা খামেনেইকে হত্যা করা গেলেই এই সংঘাতের আবহ শান্ত হবে। তাঁর এই বক্তব্যে কি আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্য?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ইজরায়েলের হামলার হাত থেকে বাঁচতে আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কারে নাকি আশ্রয় নিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। তাঁকে হত্যা করতে পারলেই ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলা সংঘাতের অবসান হবে, এমনই দাবি করলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দাবি, ইজরায়েলের লক্ষ্য সংঘাতকে আরও তীব্র করার পরিবর্তে শেষ করা। খামেনেইকে হত্যা করে ফেললেই এই সংঘাতের অবসান হবে বলে দাবি করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি আমেরিকার আধিকারিকেরা জানান, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে নাকি হত্যার ছক কষেছিল ইজরায়েল। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান খোদ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দাবি করা হচ্ছিল, এর ফলে সংঘর্ষ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু এবার নেতানিয়াহুর স্পষ্ট বক্তব্য, একমাত্র খামেনেইয়ের মৃত্যু হলেই হলে আর হবে না সংঘর্ষ বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁর দাবি, ইরান চাইছে চিরকালের জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যেতে। তেহরানই পরিস্থিতিকে পরমাণু যুদ্ধের দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছে বলেও দাবি করেন নেতানিয়াহু।
ইজরায়েলের তরফে আমেরিকাকে জানানো হয়েছিল খামেনেইকে হত্যার সুযোগ রয়েছে তাদের কাছে। তবে ইজরায়েলের এই প্রস্তাবে আমেরিকার তরফে জানানো হয়, ”এখনও পর্যন্ত ইরান কোনও আমেরিকানকে হত্যা করেনি। ফলে যতক্ষণ তারা এমন কোনও পদক্ষেপ করছে আমেরিকা তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবে না। সেক্ষেত্রেও কি খামেনেইকে হত্যার কোনও পরিকল্পনা করছে ইজরায়েল? সরাসরি কোনও উত্তর দেননি নেতানিয়াহু। তাঁর বক্তব্য, “ইজ়রায়েলের যা করণীয়, তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না।” উল্লেখ্য, খামেনেই ইরানের রাজনীতি এবং সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা। তাঁর উপর আক্রমণ হলে পুরো ইরানের শাসনব্যবস্থার উপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যকে ইরান সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে নিতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা এবং নেতানিয়াহুর হুমকি সত্যি হলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় আকারের যুদ্ধের শুরু হতে পারে। আমেরিকা, রাশিয়া এবং অন্যান্য মুসলিম দেশও ততে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে খামেনেইও চুপ নেই। গুপ্তস্থান থেকেই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি। বাঙ্কারে তাঁকে রক্ষা করছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর। সেখান থেকেই ইরানের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছেন খামেনেই বলেও সূত্রের খবর।