যুদ্ধ থামার বদলে ক্রমশ বাড়ছে সংঘাত। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাপে ঝলসে যাচ্ছে চোখ। একদিকে খামেনেইকে লাগতার হুঁশিয়ারি ট্রাম্প নেতানিয়াহুর এর পাশাপাশি ইজরায়েলি হামলায় এখনও অবধি ইরানে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮৫ জন। অন্যদিকে ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে মিসাইল হামলা তেহরানের।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ একচুল জায়গাও ছাড়তে নারাজ ইজরায়েল। জানাক যাচ্ছে যে একদিনের মধ্যে ইরানে হামলা চালিয়েছে ৫০টিরও বেশি ইজরায়েলি বিমান। হামলা হয়েছে তেহরানের একটি সেন্ট্রিফিউজ কারখানায় ওই সেন্ট্রিফিউজ কারখানা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বুধবার সেখানে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এছাড়াও বেশ কয়েকটি অস্ত্র তৈরির কারখানা লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ইজরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলি ইরানের ভূমি থেকে ভূমি এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলিতেও আক্রমণ করেছে।
এই লাগাতার হামলার জেরে এখনও পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের। বুধবার সকালেও দুই দেশ একে অপরকে লক্ষ্য করে মিসাইল ছুড়ছে। ভোররাতে ইজরায়েলের তেল আভিভে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায় ইরান। আবার ইরানের তেহরানের উত্তর-পূর্বে তেল ভাণ্ডার ও শোধনাগার লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজরায়েলি সেনা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যে তেহরান ছেড়ে পালাচ্ছেন সেখানকার নাগরিকরা। বুধবার ভোরে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মধ্য ইজরায়েলের একটি এলাকায় আগুনও লেগে গিয়েছে বলে খবর। উত্তর ইজরায়েলে অবস্থিত মেরন বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করেও আঘাত হানা হয়েছে। তবে ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
ইজরায়েলের রাজধানী তেল আভিভকে নিশানা করেছে ইরান। যদিও ইরানের হামলায় সেখানে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে তেহরানে ইজরায়েলের হামলায় বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে। ইজরায়েলি বিমানহানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের নাতানজ পরমাণুকেন্দ্র। আর তা থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতেও ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ পর পর কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইজরায়েলের দিকে ছুটে আসে। সঙ্গে সঙ্গে বাজতে শুরু করে সাইরেন। এক নাগাড়ে অন্তত ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তার পর প্রায় ৪০ মিনিটের বিরতির পর ফের দ্বিতীয় হামলা শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপে মধ্য ইজরায়েল এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক লক্ষ্য করে অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসে।
মধ্যপাচ্যের এই উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েই তেহরানকে ফের চমকালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই কোথায় আছেন, তা ইউএস জানে। কিন্তু, আমেরিকা তাঁকে এখনই হত্যা করবে না। বরং খামেনেই যেন শর্তবিহীন ভাবে আত্মসমর্পণ করেন। খামেনেইকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে দিলেন, ‘ইরান যদি নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ না করে তাহলে ফল ভুগতে হবে খামেনেইকেই।’