চারদিন পরেও বিপদ কাটেনি বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রাখা হয় নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে। অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও এখনও তিনি বিপদমুক্ত নন।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ একাধিক সমস্যা নয়ে শনিবার রাতে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্কট কাটেনি বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। চারদিন পরেও আইসিইউতে মাল্টি অর্গান সাপোর্ট সিস্টেমে রয়েছেন সাংসদ। বুধবার দুপুরে পরিবারের সদস্যদের কাছে সাংসদের শারীরিক সমস্যার দিকগুলি তুলে ধরবেন চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে দেওয়া হয় নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন। তাঁর জন্য গঠিত ৮ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড সবসময় নজরে রাখছে তাঁকে। প্যানক্রিয়াটাইটিসের সমস্যার পাশাপাশি সাংসদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের অসুস্থতা ঘিরে তৈরি হয়েছে উদ্বেগের মেঘ। এখন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়তে তা চিন্তায় রেছেছে চিকিৎসকদের। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট নিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরেই তাঁর চিকিৎসার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইতিমধ্যে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ ,শুভেন্দু অধিকারীরা। শুভেন্দু জানান, ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অভিজিতবাবুর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হয়েছে। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা অভিজিতবাবুর ভাইপোর সঙ্গেও কথা বলেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বও গোটা বিষয়টির ওপর পুরো নজর রেখেছে বলে জানান শুভেন্দু। যদি প্রয়োজন হয় এয়ার এম্ব্যুল্যান্স করে তাকে দিল্লিতেও নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
জানা গেছে যে অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সেপসিসে আক্রান্ত অভিজিৎ গাঙ্গুলি। কি এই জিআই সেপসিস?
মানুষ সেপসিসে আক্রান্ত হন তখনই, যখন শরীরে অধিক মাত্রায় কোনও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হয় না। আচমকা আসে এবং এর জেরে মৃত্যু অবধি হয়। সংক্রমণ যদি অতিমাত্রায় সংক্রমণ ছড়ায় তাহলে পাল্লা দিয়ে বাড়ে প্রদাহও ফলে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায়। রোগ প্রতিরোধ শক্তি লড়াই করার বদলে এমন পরিস্থিতি তৈরি করে, যা রোগীর জন্য সঙ্কটজনক। যার চিকিৎসা যথাসময়ে না হলে মৃত্যুও হতে পারে। সেপসিসের সংক্রমণ নানা ভাবে হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে জীবাণু শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ঢুকতে পারে। ত্বকের রন্ধ্রপথ ধরেও ঢুকতে পারে সংক্রমণ। আবার খাদ্যনালী বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাকের মাধ্যমেও ঢুকতে পারে। গ্যাসট্রোইনটেস্টাইনাল সেপসিস তখনই বলা হবে, যখন জীবাণু খাদ্যনালী বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাকের মাধ্যমে শরীরে ঢুকবে এবং তা থেকে অন্ত্রের যে কোনও জায়গায় সংক্রমণ ছড়াবে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন অভিজিৎ বাবুকে সুস্থ করে তোলার জন্য তাঁরা সবরকম চেষ্টা করছেন।