ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক
সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি ‘অধিকার’ নয়, সাফ বার্তা শীর্ষ আদালতের
সরকারি চাকরি বংশানুক্রমে পাওয়া যাবে না। বাবা সরকারি চাকরিতে ছিলেন, তাই ছেলে সেই পদে বসবেন—এই ভাবনা এখন অতীত। সহানুভূতির বশবর্তী হয়ে চাকরি চাওয়া কোনও অধিকার নয়, স্পষ্ট জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, শুধুমাত্র সহানুভূতি নয়—চাকরির প্রয়োজনীয়তা, আর্থিক অসহায়ত্ব এবং পারিবারিক দীনদশা যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন রাজস্থানের রবি কুমার জেফ। তাঁর বাবা ছিলেন সেন্ট্রাল এক্সাইজ বিভাগের প্রধান কমিশনার। ২০১৫ সালের আগস্টে বাবার মৃত্যু হলে রবি CGST এবং সেন্ট্রাল এক্সাইজ (জয়পুর জোন)-এ সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির আবেদন করেন।
কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় বিভাগীয় কমিটি। জানা গিয়েছে, ওই সময় মোট ১৯ জন আবেদনকারী ছিলেন, যাদের মধ্যে মাত্র ৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাকিদের মতো রবিকেও বাদ দেওয়া হয়, কারণ তাঁর পারিবারিক আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট মজবুত।
আদালতে জমা পড়া তথ্য অনুযায়ী, রবির বাবা রেখে গিয়েছেন দুটি বাংলো, ৩৩ একর জমি এবং প্রতি মাসে ৮৫ হাজার টাকা পেনশন, যা দিয়ে পরিবার নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করতে পারে। তাই সেই প্রেক্ষিতে রবির চাকরির আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় বলেই সিদ্ধান্ত আদালতের।
রায়ে বিচারপতিরা বলেন, “সহানুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগ কোনও অধিকার নয়। এটি একটি ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা, যাতে শুধুমাত্র এমন পরিবারদের সাহায্য করা যায়, যারা কর্মীর আকস্মিক মৃত্যুতে চরম আর্থিক অনটনে পড়েছে।”
এই রায়ে স্পষ্ট যে সরকারি চাকরি এখন আর পারিবারিক উত্তরাধিকার নয়। আদালতের এই পর্যবেক্ষণ ভবিষ্যতে বহু আবেদনকারীর ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।