একদিকে ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের সময়সীমা অন্যদিকে ইজরায়েলের হুমকি কোন কিছুকেই পাত্তা না দিয়ে ইরান লাগাতার হামলা করে চলেছে ইজরায়েলের ওপর। পালটা দিচ্ছে নেতানিয়াহুর দেশও। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোন লক্ষ্মণ তো নেইই উলটে আরও বাড়ছে উত্তাপ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির কোনও লক্ষণই নেই। উল্টে বেড়েই চলেছে মিসাইল হামলা। ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষের আবহে ইতিমধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্রে ক্লাস্টার বোমা ভরে ইজরায়েলে নিক্ষেপ করেছে ইরান। চলতি সংঘাতে প্রথম এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করল তেহরান। অন্যদিকে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার এখনও পর্যন্ত দুই দেশই মিসাইল হামলা অব্যাহত রেখেছে।
শনিবার নবম দিনে পা রাখল মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নতুন করে ইরান ইজরায়েলের ওপর আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়েছে অন্যদিকে তেল আভিভ থেকেও লাগাতার উড়ে গিয়েছে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র। রাতের সংঘর্ষে দুই দেশের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বা হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে হামলা চলেছে মুহুর্মুহু। এই হামলার জেরে দুই দেশের মানুষই বাধ্য হচ্ছেন বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে।
শুক্রবার গোটা রাতজুড়েই দুই দেশে লাগাতার সাইরেন বেজেছে। ইরানের রাজধানী তেহরানে মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরঞ্জাম তৈরির কারখানা, ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের সদর দফতর লক্ষ্য করে রাতভর হামলা চালানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে ইজরায়েলের টার্গেট ছিল ইরানের সামরিক ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্রের সংরক্ষণকেন্দ্রগুলি। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি দক্ষিণ ইজরায়েলেও সারা রাত সাইরেন বেজেছে। ইরান থেকে ওই অঞ্চলে অন্তত পাঁচটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ দেশ জুড়ে সতর্কতা জারি করে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী। দেশের সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক করা হয় ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে এই সতর্কতার কিছু ক্ষণ পরেই তেল আভিভ, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ মধ্য ইজ়রায়েলের অধিকাংশ এলাকায় বেজে ওঠে সাইরেন আকাশে দেখা যায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। তবে সেগুলিকে আকাশেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি আইডিএফের।
জানা গেছে যে ইরানের হামলাতে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইজরায়েলের স্টক এক্সচেঞ্জ। ইজরায়েলের তেল আভিভ ডিস্ট্রিক্টের রামত গান শহরকে লক্ষ্য করে এই মিসাইল গুলো ছোঁড়া হয়েছিল। আর সেই মিসাইলের আঘাতেই গুঁড়িয়ে গিয়েছে একাধিক বিল্ডিং। ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে ইজরায়েলের স্টক এক্সচেঞ্জ বিল্ডিংয়ের একাংশ।
অন্যদিকে ইজরায়েলকে কার্যত প্রতিদিন বিপুল টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে ইরানের হামলা আটকাতে ও হামলা করতে। ইরানের মিসাইল প্রতিহত করতে ডেভিড স্লিং ও অ্যারো-৩ ব্যবস্থা রয়েছে ইজরায়েলের। একটা মিসাইল প্রতিহত করতে ৭ লক্ষ ডলার এবং ৪ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। গত কয়েকদিনে ইরান ৪০০-র বেশি মিসাইল ছুড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে সংঘাত একমাস জারি থাকলে ইজরায়েলের ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। ফলে ইরানের সঙ্গে সংঘাত দ্রুত শেষ করার জন্য নেতানিয়াহুর উপরও চাপ বাড়ছে।