সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত এক ভিডিও দেখে স্তম্ভিত। প্রশ্ন একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে এ কোন মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি? ভিন জাতের ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার খেসারত দিতে হয়েছে এক পরিবারকে। শুদ্ধিকরণের নামে জোর করে একই পরিবারের ৪০ জনের মাথা ‘ন্যাড়া’ করার অভিযোগ উঠল ওড়িশার রায়গড় জেলার কাশীপুর ব্লকের বৈগানাগুড়া গ্রামে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সেখানকার প্রশাসন।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক
একবিংশ শতাব্দীতে মধ্যযুগীয় বর্বরতা! যা দেখে স্তম্ভিত মানুষ। অন্যজাতে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার খেসারত দিতে হল পরিবারকে। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার রায়গড় জেলার কাশীপুর ব্লকের বৈগানাগুড়া গ্রামে। শুদ্ধিকরণের নামে জোর করে একই পরিবারের ৪০ জনের মাথা ‘ন্যাড়া’ করার অভিযোগ উঠল ওড়িশার এই গ্রামে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও দেখে স্তম্ভিত মানুষ।
অভিযোগ,ওড়িশার রায়গড় জেলার কাশীপুর ব্লকের বৈগানাগুড়া গ্রামে এক তপসিলি উপজাতি অর্থাৎ এসটি সম্প্রদায়ের মেয়ের সঙ্গে পাশের গ্রামের তপসিলি জাতি অর্থাৎ এসসি জাতি সম্প্রদায়ের এক ছেলের বিয়ে হয়। এই বিয়েতে মেয়েটির পরিবারের খুব একটা মত ছিল না।গ্রামবাসীরাও ঘোর আপত্তি দেখায় এই বিয়েতে। তা স্বত্তেও এই বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মেয়েটির পরিবারের উপর নেমে আসে খাঁড়া। অভিযোগ, গ্রামবাসীরা মেয়েটির পরিবারের উপর ক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সেই সঙ্গেই গ্রামের মোড়লরা নিদান দেন, ভিন জাতের ছেলেকে বিয়ে করে সামাজিক রীত ভেঙেছেন তাঁরা। এমন কি মেয়েটির পরিবারকে গ্রামবাসীরা একঘরে করে দেয় বলে অভিযোগ। ভিন জাতের ছেলের সঙ্গে উচ্চ পরিবারের মেয়ের বিয়ে হওয়ার অপরাধে এই কারণে গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে বিচার হয় সেই পরিবারের। সালিশি সভায় নাকি শর্ত দেওয়া হয় শুদ্ধিকরণ করলে তাঁদের আবারও সমাজে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। না হলে আজীবন ওই পরিবারকে একঘরে থাকতে হবে, বলে নিদান দেওয়া হয়। এতে মেয়েটির পরিবার রাজি হয় বলে জানা গেছে। অভিযোগ, একপ্রকার চাপে পড়েই ওই পরিবার শুদ্ধিকরণে রাজি হয়।
অভিযোগ, ‘ন্যাড়া’ হয়ে মেয়েটির পরিবারকে শুদ্ধিকরণে কথা বলা হয়। জানা গেছে, এরপর মেয়েটির পরিবার মন্দিরে গিয়ে পশুবলি দেয়। তারপর ওই পরিবারের ৪০ জনকে ন্যাড়া করা হয়। সমাজ মাধ্যমে এমন ভিডিওই সামনে এসেছে। যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ৪০ জন ব্যক্তি মাথা ন্যাড়া করে মাঠে বসে আছে। খবরটি সমাজ মাধ্যমে জানাজানি হতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।কাশীপুরের বিডিও বিজয় সেয় এই ঘটনাটি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তের সাপেক্ষে ব্লক স্তরের এক আধিকারিককে ওই গ্রামে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।