বিশ্বজুড়ে অশান্তির মেঘ। একদিকে ইরান-ইজরায়েল-আমেরিকা যুদ্ধ। এর মধ্যেই সিরিয়ার চার্চে জঙ্গি হামলা। প্রার্থনা চলাকালীন ঘটনাটি ঘটে। আচমকা চলতে থাকে এলোপাথাড়ি গুলি যার জেরে লুটিয়ে পড়েন শিশু থেকে বৃদ্ধ। এখনও অবধি কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ রবিবার দামাস্কাস শহরের মার এলায়াস গির্জার ভিতরে চলছিল প্রার্থনা। সেই প্রার্থনা চলাকালীন আচমকাই এক আত্মঘাতী হামলাকারী ঢুকে পড়ে গির্জার ভেতর এবং সঙ্গে সঙ্গে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে সে। তারপর নিজেকেও গুলি করে। ওই হামলাকারীর শরীরে বোমা বাঁধা ছিল। গুলির সঙ্গে সঙ্গে বোমাটি ফেটে যায়। গির্জার ভিতর বিকট শব্দে বড়সড় বিস্ফোরণ হয়।
ভয়াবহ এই ঘটনার পিছনে আইএসআইএস জঙ্গি সংগঠনের দিকে আঙুল তুলছে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। খ্রিস্টানদের পবিত্র দিন রবিবার দামাস্কাসের সেন্ট ইলিয়াস গির্জায় প্রার্থনা করছিলেন বহু মানুষ। যেহেতু অনেক মানুষ ছিলেন তাই প্রার্থনার সময়কেই এই হামলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এলোপাথাড়ি ভাবে গুলি লেগে প্রাণহানি হয়েছে কমপক্ষে ২০ জনের। পাশাপাশি আহত হয়েছেন অন্তত ৫২ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ আহতদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় নিরাপত্তা কর্মী এবং পুলিশ। সকলকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দামাস্কাসের সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকায় অবস্থিত চার্চে এই হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব মহল বিস্মিত। সিরিয়ায় গত ডিসেম্বরে পালাবদলের পর এটাই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা। পুলিশের কাছে দেওয়া এক প্রত্যক্ষদর্শী বয়ান অনুযায়ী, ওই আত্মঘাতী হামলাকারীর বুলেট শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাকে কব্জা করার চেষ্টা হয়। তার আগেই বিস্ফোরণে নিজেকে শেষ করে দেয়। সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী হামাজ মোস্তাফা এই হামলার নিন্দা করে বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত সাজা দেওয়া হবে। মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএসআইএস জঙ্গি চার্চে ঢুকে প্রথমে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক থেকে গুলি চালায়। তারপর কোমরের বেল্টে বাঁধা বিস্ফোরকের সাহায্যে আত্মঘাতী হন।
সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও অবধি আত্মঘাতী হামলাকারীর পরিচয় জানা যায়নি তবে তাদের সন্দেহ এই ঘটনার পিছনে ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর হাত রয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় কোনও জঙ্গি সংগঠন স্বীকার করেনি ।