মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ শেষ, সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা ট্রাম্পের

টানা ১২ দিন ধরে ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছিল, তাতে এবার ছেদ পড়ল। সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করলেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়ে পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় ইরান কতটা সায় দেয় সেটাই দেখার।

সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ অবশেষে কি শান্তি ফিরতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্যে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করলেন ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির কথা। তাঁর দাবি, এটাই হবে ১২ দিনের যুদ্ধের সমাপ্তি। কিছুদিন আগে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত চলাকালীন একইভাবে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সোমবার গভীর রাতে ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার করে পোস্ট করেন। সেই পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ইরান এবং ইজরায়েল্ভ দুই দেশই এই সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্তে সহমত হয়েছে। আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে ই সম্পূর্ণ সংঘর্ষবিরতি শুরু হবে। প্রথমে ইরান সংঘর্ষবিরতি শুরু করবে এবং তার ১২ ঘণ্টা পরে ইজরায়েল তা অনুসরণ করবে। ২৪ ঘণ্টা পর দু’ দেশের মধ্যে ১২ দিনের টানা যুদ্ধ শেষ বলে ঘোষণা করা হবে। এক পক্ষের সংঘর্ষবিরতি চলাকালীন অপর পক্ষকেও শান্তি বজায় রাখতে হবে।”

তাঁর আরও বক্তব্য, ‘’১২ দিনের যুদ্ধ শেষ করার মতো ক্ষমতা, সাহস ও বুদ্ধিমত্তা রাখে দুই দেশই। দুই দেশের প্রেসিডেন্টকেই অভিনন্দন। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ বছরের পর বছর ধরে চলতে পারত যা কিনা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে এটা হয়নি। আর হবেও না।‘’

ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি অবশ্য জানান, স্থানীয় সময় ভোর ৪টের মধ্যে ইজরায়েল বিমান হামলা বন্ধ করলে, তাঁরাও হামলা বন্ধ করে দেবে । তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টে তিনি লেখেন, “এখনও পর্যন্ত আমাদের যুদ্ধবিরতি বিষয়ে কোনও চুক্তি হয়নি ৷ তবে, তেহরানের সময় ভোর 4টের পর ইজরায়েল হামলা না-করলে, আমরাও আর সংঘাতে জড়াব না ৷”

উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইরানে প্রথম হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই সময় তৈরি হয়েছিল প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা আর একদিন পরেই সেই আশঙ্কা সত্যি করে ইজরায়েলে পালটা হামলা চালায় ইরান। ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। মৃত্যু হয় ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। প্রাণ হারান ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে থাকে দুই দেশই লাগাতার একে অন্যের ওপর মিসাইল আক্রমণ অব্যাহত রাখে এরপর রবিবার যুদ্ধে এন্ট্রি নেন ট্রাম্প, আমেরিকা হামলা চালায় ইরানের ওপর। অবশেষে বোধহয় শান্ত হতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্য।