আরজিকরের রেশ এখনও কাটেনি, এর মধ্যেই ফের বেআব্রু তিলোত্তমা। ফের কলকাতা। এবার কসবার ল’কলেজে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণী। গ্রেফতার অভিযুক্ত ৩ জন।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আরজি করের ছায়া এ বার কসবায়। কলেজের মধ্যেই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ দক্ষিণ কলকাতায়। পুলিশ সূত্রের খবর, কসবার একটি আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা তরুণী কসবা থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মূল অভিযুক্ত-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ১লা জুলাই অবধি তিনজনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ আদালতের।
দক্ষিণ কলকাতার একটি ল’কলেজে গত বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগকারিণী ওই কলেজেরই ছাত্রী। ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁকে ডাকা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে যে, ইউনিয়নের জিএস(সাধারণ সম্পাদক) পদ পাইয়ে দেবে বলে কলেজের একটি রুমে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। তাঁর অভিযোগ, তিনি সেখানে গেলে তাঁর উপর চড়াও হন তিনজন। গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে ডাকা হয় ইউনিয়ন রুমে এবং তারপর গার্ডরুমে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেই নির্মম অত্যাচার চলে, মোবাইলে ভিডিও করে রাখা হয়, কাউকে কিছু না বলতে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই ছাত্রী কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন পুলিশ আধিকারিকরা। প্রথমে দু’জনকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। তাঁদের থেকেই মূল অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যায়। কালবিলম্ব না করে মূল অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে তালবাগান এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ২ অভিযুক্তকে। তাদের জেরা করে মূল অভিযুক্তের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। মনোজিত মিশ্র ওরফে ম্যাঙ্গো নামে ওই টিএমসিপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। শারীরিক পরীক্ষার জন্য ছাত্রীকে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। ঘটনার সময় কারা কলেজে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা কী দেখেছেন তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয় এবং ১লা জুলাই অবধি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মূল্ অভিযুক্ত এই মুহূর্তে কলেজের কেউ নন, তিনি প্রাক্তনী। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্র কীভাবে এত রাতে কলেজে ঢুকল? নিরাপত্তারক্ষীরাও বা কোথায় ছিলেন? আর এত বড় ঘটনা ঘটে গেল কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ টের পেল না? ধৃতদের মোবাইল ফোন ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে বিরোধীরাও।