যত সময় গড়াচ্ছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে কসবা গণধর্ষণ কান্ডে। এবার সামনে এল অভিযুক্ত জেইব আহমেদের দুর্নীতির কথা। জানা গেছে ঘুরপথে টাকার মাধ্যমে এই কলেজে ভর্তি হয় জেইব।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আইন কলেজে ভর্তিতেও দূর্নীতি। ভর্তির ক্ষেত্রে সাধারণত ৭০০-র মধ্যে র্যাঙ্ক থাকতে হয় ভর্তির জন্য কিন্তু অভিযুক্ত জেইব আহমেদের র্যাঙ্ক ২৬৩৪, তার পরেও কি করে ভর্তি হল এই কলেজে? এক্ষেত্রেও মনোজিতের হাত ছিল বলেই জানা গেছে।
আরপ্লাসের হাতে এসেছে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের সেই মেরিট লিস্ট, যাতে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত জেইব আহমেদের র্যা ঙ্ক ২৬৩৪। যার দ্বারা ভর্তি হওয়া সম্ভবই নয় কিন্তু মনোজিত মিশ্রের মত ‘দাদা’ যেখানে আছে সেখানে ‘ভাই’ জেইব আহমেদের অসুবিধা হওয়ার কথাই নয়। কলেজের অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কলেজে জেনারেল ক্যাটেগরির পড়ুয়াদের ভর্তি সাধারণত হয় ৫০০-৫৫০ র্যাঙ্কেও মধ্যে। এসটি, এসসির ক্ষেত্রে তা আরও কিছু নেমে ৭০০–৭৫০ হয় কোনও কোনও বছর। কিন্তু জেইবের এই র্যাঙ্কে ওই কলেজ কেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ চারটি সরকারি আইন কলেজের কোথাওই তার ভর্তি হওয়ার কথা নয়।
আইন পড়তে গেলেও দিতে হয় একটি এন্ট্রানস্ টেস্ট যার নাম ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি ল এন্ট্রানস্ টেস্ট’ ৷ ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে যেমন জয়েন্ট দিতে হয়, তারপর র্যাঙ্ক অনুযায়ী কাউন্সেলিং করে তাকে ভর্তি হতে হয় কলেজে এক্ষেত্রেও কোনও পড়ুয়া আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে তাঁকে ওই এন্ট্রান্স এক্সাম দিতে হয়৷ তারপর তার র্যাঙ্ক অনুযায়ী সে সুযোগ পায় সরকারি বা বেসরকারি আইন কলেজে৷
কিন্তু জেইবের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কিভাবে বদলে গেল? জানা যাচ্ছে এর পিছনে হাত মনোজিতেরই। এই মনোজিত বিভিন্ন সময়ে স্টুডেন্ট ভর্তি করেছিল লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ, কোনও সিট ৫০ হাজারে তো কোনও সিটের দাম ২ লক্ষ টাকা। বছর দুয়েক আগে নাকি প্রায় ৭০–৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কালেকশন করে মনোজিত আর এভাবেই কলেজে ভর্তি হয় জেইব।
এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লিখেছেন, ‘সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত জেইব আহমেদ, CULET-UG 2024-এ হতাশাজনক ২৬৩৪ র্যাঙ্ক অর্জন করা সত্ত্বেও, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কলেজে ভর্তি হয়েছিল। এদিকে, যাঁরা অনেক ভাল র্যাঙ্ক পেয়েছেন, মেধাবী এবং আইন মেনে চলা ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় আপনাকে স্বাগত যেখানে আইনের শাসনকে উপহাস করা হয় এবং রাজনৈতিক সংযোগ থাকা অপরাধীদের রক্ষা করার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়।’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এত পিছনে র্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও জেইব কীভাবে এই ল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে এবং কারা তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করছে৷