যত সময় গড়াচ্ছে মনোজিতের কুকীর্তির পর্দা ফাঁস হচ্ছে তত। এবার সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা দেখে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি মনোজিতের এত বাড়বাড়ন্ত কলেজের প্রশ্রয়েই?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ কলেজের প্রশ্রয়েই কি মনোজিতের এত বাড়বাড়ন্ত! যে মনোজিতের নামে ২০২৪ সালের আগে এত এত অভিযোগ কলেজে ভাঙচুর শ্লীলতাহানির মত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল সেই মনোজিতকেই রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হয়েছিল কলেজের দায়িত্ব! আরপ্লাসের হাতে সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রকাশ্যে এসেছে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের দুটি নোটিশ। ২০২৪ সালের ১৩ই আগস্ট জারি হওয়া সেই বিজ্ঞপ্তি, যা প্রকাশিত হয়েছে ভাইস প্রিন্সিপালের তরফে, তাতে বলা হয়েছে সমস্ত সেমেস্টারের যেকোন রকম সমস্যায় যেন মনোজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, সেই বিজ্ঞপ্তিতে আবার নাম্বারও দেওয়া হয়েছে তার। অর্থাৎ কলেজই এক জন অস্থায়ী কর্মীর ওপর গোটা কলেজের এই গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে, সেই কর্মী যার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে বারবার। কিন্তু কলেজ চুপ করে থেকেছে।
আসা যাক দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তির কথায়, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট ভাইস প্রিন্সিপালের তরফে জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল ৩.৪৫ এ লাস্ট বেল পড়বে এবং ৪টের মধ্যে সমস্ত পড়ুয়া যেন কলেজ খালি করে দেয়। তাহলে ঘটনার দিন কেন মনোজিতরা কলেজে ছিল? মনোজিত মিশ্র না হয় সমস্ত নিয়মের বাইরে কিন্তু জেইব এবং প্রমিত প্রথম বর্ষের পড়ুয়া হয়ে কিভাবে কলেজের নিয়ম অমান্য করতে পারল? একদিনের ঘটনা তো নয় এটা, ভাইস প্রিন্সিপাল কি জানতেন না কলেজ ছুটির পর রোজ মনোজিত এবং তার দলবল কলেজে থাকছে, কেন আটকাননি তিনি? যদি তিনি নাও জেনে থাকেন সেক্ষেত্রেও তার গাফিলতি থেকে যাচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষীরাই বা কেন চুপ ছিলেন?
অর্থাৎ কলেজও কার্যত মনোজিতকে নিয়ে চোখ বুজে ছিল। আর তার ফল হিসাবে নিজের কলেজেই ধর্ষিতা হতে হল ওই তরুণীকে। যদি মনোজিতের এত দৌড়াত্ম্য শুরুতেই বিনাশ করা যেত তাহলে হয়ত আরজিকর কাণ্ডের দশ মাসের মধ্যে একটা এত বড় ঘটনা ঘটত না। রাজ্যের নারী নিরাপত্তা শব্দটা কার্যত প্রহসনে পরিণত হত না। কিন্তু শুরুতে পুলিশ এবং পরে কলেজ দুই ক্ষেত্রেই আস্কারা দেওয়া হয়েছে মনোজিতকে যার ফলশ্রুতি আইনের কলেজে আইনের ছাত্রীকেই ধর্ষণ।