ব্রিক্স সম্মেলনের ওপর যারপরনাই চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন ব্রাজিলে রয়েছেন সেই সময়েই ব্রিকসের সঙ্গে থাকা দেশগুলিকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ করের হুমকি দিলেন ট্রাম্প।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আমেরিকা বিরোধী নীতির সঙ্গে যুক্ত হলেই দিতে হবে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত কর, প্রধানমন্ত্রী যখন ব্রাজিলে রয়েছেন তখনই ব্রিকস দেখল ট্রাম্পের রক্তচক্ষু। ট্রাম্প স্পষ্ট হুমকি দিলেন ব্রিকসের সঙ্গে থাকা দেশগুলির উদ্দেশ্যে।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের একাধিক দেশের উপর করের বোঝা বাড়িয়েছেন আর তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণে এক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। রবিবার ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে ট্রাম্পের এই নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেন রাষ্ট্র নেতারা আর আশ্চর্য জনক ভাবে সেই আলোচনার কয়েকঘণ্টার মধ্যে শুল্কের পরিমাণ আরও ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷
এই প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, “ব্রিকস সম্মেলনে আমেরিকা বিরোধী নীতির সঙ্গে যুক্ত হলে, সেই সমস্ত দেশের উপর আরও ১০শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে ৷ এই নীতিতে কোনও রকম পরিবর্ত করা হবে না’’। এখানেই না থেমে অন্য একটি পোস্টে তিনি আরও লেখেন, “সোমবার থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুল্ক এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হবে মার্কিন প্রশাসনের তরফে ৷ এই বিষয়ে সকলের সহযোগীতার জন্য ধন্যবাদ”।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি ভারতের ক্ষেত্রেও এই অতিরিক্ত ১০ শতাংশ করের বোঝা চাপবে? কারণ প্রথম থেকেই ব্রিকসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল ভারত। যদিও সাম্প্রতিক অতীতে আমেরিকার সঙ্গেও ভারতের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। শোনা যাচ্ছিল দুই দেশের মধ্যে চলতি সপ্তাহে বাণিজ্যচুক্তি হতে পারে বলেও। ফলে দিল্লির আশা ছিল যে ভারতীয় পণ্যের উপর মার্কিন শুল্ক কিছুটা কমতে পারে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনে থাকাকালীনই যেভাবে এই মঞ্চকে নিশানা করলেন ট্রাম্প, তাতে প্রশ্ন উঠছে বাণিজ্যচুক্তি এবং শুল্কছাড়ের বিষয়গুলি নিয়ে। যদিও ‘বন্ধু’ মোদির দেশের জন্য আলাদা করে কোনও ছাড় থাকবে না সেকথাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।
ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে শুরু করেছে বিশ্বের একাধিক দেশ। চিন দক্ষিণ আফ্রিকা সরব হয়েছে, চীনের সাফ কথা শুল্কের ভয় দেখিয়ে ট্রাম্প অন্য দেশের ওপর জোর করছেন। চিনের আরও বক্তব্য, শুল্ক ব্যবস্থাকে এ ভাবে ব্যবহার করলে আসলে কারও কোনও উপকার হবে না। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “যেভাবে শুল্ককেকে জুলুম চালানোর অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই আচরণের তীব্র বিরোধিতা করছে চিন।” পাশাপাশি, ব্রিক্সের আর এক সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকাও জানিয়েছে, তারা আমেরিকাবিরোধী নয়।এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্য দফতরের মুখপাত্র জানান, তাঁরা আমেরিকাবিরোধী নন। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য যে তারা এখনও একই রকম আগ্রহী, তাও জানিয়েছে ব্রিকসের এই সদস্যরাষ্ট্র।