গুজরাটে ভয়াবহ ব্রিজ বিপর্যয়। যার জেরে কমপক্ষে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনায় শোক প্রকাশ নরেন্দ্র মোদির।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ বিশ্বমঞ্চে মোদি যখন সমাদৃত হচ্ছেন, যখন ভারতের কথা তাঁর মাধ্যমে উপস্থাপিত হচ্ছে বিশ্বের দরবারে তখনই নরেন্দ্র মোদির গড় গুজরাটেই ব্রিজ ভেঙে পড়ার খবর যে বিড়ম্বনা তৈরি করবে তা বলাই বাহুল্য। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদি।
ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই যে প্রশ্ন বারবার উঠছে তা হল কেন ঘটল এত বড় দুর্ঘটনা? স্থানীয় বাসিন্দারা কিন্তু এর দায় দিছেন প্রশাসনের ওপরেই। তাঁদের অভিযোগ, ব্রিজটি প্রায় ৪০ বছরের পুরনো, কিন্তু এত পুরনো সেতুটির দেখভাল ঠিক ভাবে করা হয়নি এবং করা হতও না। রোজ প্রচুর গাড়ি চলাচল করতে সেতুটি দিয়ে যার জেরে প্রবল যানজট হত সেতুতে। এই রুগ্ন দশা নিয়মিত যান চলাচলের জন্য ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছিল। কিন্তু একাধিক বার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা থেকে এই কথা স্পষ্ট যে, এই ব্রিজটি অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় ছিল কিন্তু তা সত্বেও গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলত পারাপার। এই সমস্যার মাঝে দোসর হয়ে দাঁড়িয়েছিল গত কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টি এবং তার জেরে নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়া এর ফলে আরও দুর্বল হয়ে পড়ে ব্রিজটি। এই অবস্থায় তার উপর ভারী গাড়ি চলাচলের কারণে এই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনিকভাবে এই দুর্ঘটনার কারণ স্পষ্ট করা হয়নি।
অন্যদিকে পঞ্চদেশীয় সফর থেকেই এই দুর্ঘটনার জন্য গভীর ভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন যে, “গুজরাটের ভডোদরা জেলায় একটি সেতু ভেঙে প্রাণহানির ঘটনা গভীরভাবে দুঃখজনক। এই দুর্ঘটনায় যারা নিজেদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। প্রার্থনা করি আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক”। এই পোস্টেই মৃত ও আহতদের উদ্দেশে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে”।
বুধবার সকালে গুজরাটের ভডোদরার পডরা তালুকের গম্ভীরা-মুজপুর সেতুর উপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। আচমকাই সেতুর মাঝামাঝি অংশ কার্যত খসে পড়ে নীচের মহিসাগর বা মাহি নদীতে। সেতুর ওই অংশে তিন-চারটি গাড়ি ছিল। সব সমেতই সেতুর ওই অংশ নদীতে পড়ে যায়। সেতুর যে অংশ দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার একেবারে কিনারায় বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে একটি তেলের ট্যাঙ্কার। এটিও যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে হুড়মুড়িয়ে নদীতে পড়তে পারে।